গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সারা দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে জেলা পরিষদে তৃণমূল একটিই আসন পেয়েছিল। তাতে জিতেছিলেন অখিল বর্মন। পোড় খাওয়া সেই নেতার বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছেন রাজনীতিতে আনকোরা সিপিএমের রঞ্জন মিত্র।
কিন্তু তা বলে বংশীহারীতে অখিলবাবুই ‘অ্যাডভান্টেজ’ ভেবে রাখলে ভুল হবে। কেননা অখিল-রঞ্জন লড়াইটা শুধু খাতা-কলমে। অখিলবাবু আসলে লড়ছেন মাগদালিনা মুর্মুর বিরুদ্ধেই। মাগদালিনা ছিলেন জেলার সভাধিপতি। এই আসন থেকেই তিনি জিতেছিলেন আগের বারের নির্বাচনে। সারা রাজ্যের লোক তাঁকে চেনেন।
তাই অখিলবাবু বরং কিছুটা উদ্বিগ্নই। তবে তিনিও যে একেবারে একা, তা নয়। দলের জেলা সভাপতি বিধায়ক বিপ্লব মিত্র রয়েছেন তাঁর পিছনে। তিনি তাঁকে অভয় দিয়েছেন, “আপনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারটা করুন। বাকিটা আমি দেখে নেব।”
তবে তাতেও অখিলবাবুর সমস্যা কাটছে না। মহাবাড়ি, ব্রজবল্লভপুর ও এলাহাবাদ, তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদের এই আসন। গত পঞ্চায়েত ভোটে ব্রজবল্লভপুর তৃণমূল-বিজেপি জোটের দখলে যায়। বাকি দু’টি কিন্তু সিপিএমের দখলে। গত বিধানসভা ভোটে মহাবাড়ি ছাড়া বাকি দু’টি অঞ্চলেও সিপিএম এগিয়ে ছিল। তা ছাড়া, এই এলাকায় পাঁচটি মৌজা আদিবাসী অধ্যুষিত। সেখানে মাগদালিনার প্রভাব যথেষ্ট। তাই ভোটের অঙ্কের নিরিখে কিছুটা হলেও পিছিয়ে শুরু করতে হয়েছে অখিলবাবুকে। তৃণমূলের অস্ত্র হল, মাগদালিনার আমলের অনুন্নয়নের অভিযোগ। সেই প্রচারের ধাক্কা যে রঞ্জনবাবুকে কিছুটা হলেও বেকায়দায় ফেলছে তা মাগদালিনার নিজের কথাতেই স্পষ্ট। বিদায়ী সভাধিপতি বলেন, “সব কাজ করতে পেরেছি এটা বলব না। তবে অনেক কাজই হয়েছে। সেটা আমরা বলছি। তাতে দলের নতুন প্রার্থীও ভাল সাড়া পাচ্ছেন।” সিপিএম প্রার্থী রঞ্জনবাবুর দাবি, ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, “অখিলবাবু এলাকার লোক নন। স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকেই সমর্থন করবেন।”
অখিলবাবু সেই মাগদালিনাকেই আক্রমণ করে বলছেন, “সিপিএমের সভাধিপতিকে তো ভোটের পরে আর এলাকায় দেখাই যেত না। আমাকে ও দলকে সব সময় পাশে পাবেন।” |