পুড়ে গিয়েছে ৬৩ কেভি ট্রান্সফর্মার। তাই সপ্তাহ তিনেক ধরে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে নবগ্রাম থানা এলাকার সুকি মৌজার ২১টি সাব-মার্সিবেল পাম্প আর ২টি গভীর নলকূপ। স্থানীয় কিন্তু নেতারা তো ব্যস্ত ভোটের কাজে! তাই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেননি কেউই। ফলে সেচের জলের অভাবে আমনধানের চারা শুকোচ্ছে মাঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুকি মৌজার প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমিতে আমনধানের চাষ হয়। তার মধ্যে অধিকাংশ জমিতেই আমনধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। আকাশে বৃষ্টি নেই বেশ কিছুদিন ধরে। এ দিকে বিদ্যুৎও অমিল। ফলে জলসেচও বন্ধ। বীজতলা শুকিয়ে ফুটিফাটা হতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা দিবাকর মণ্ডল বলেন, “আমি ১০ বিঘা জমিতে আমনধানের চাষ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির জল নেই। বিদ্যুতের অভাবে মার্সিবেল পাম্প ও গভীর নলকূপ অচল। ফলে আমনধানের চাষ শুকিয়ে শেষ হওয়ার পথে।”
আমনধানের ক্ষতির পাশাপাশি সংকট দেখা দিয়েছে পানীয় জলেরও। ৫০ টাকায় ভ্যান-রিকশা ভাড়া করে ৩ কিলোমিটার দূর থেকে পানীয় জল নিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। ওই জলটুকু খাবার জন্য বাবহার করা হলেও স্নান, বাসন ধোয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুকুরের দূষিত জলই। সামনেই স্কুলের পার্বিক পরীক্ষা। অথচ বিদ্যুৎ নেই। আলোর অভাবে লেখাপড়াও শিকেয় উঠেছে।
ওই অবস্থা থেকে রেহাই কবে মিলবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারাও। বিদ্যুৎ দফতরের নবগ্রামের স্টেশন ম্যানেজার প্রেমানন্দ সেনগুপ্ত বলেন, “পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফর্মার বদলে দেওয়ার জন্য ডিভিশান অফিসে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। সেখানে থেকে ট্রান্সফর্মার পাওয়া গেলে বদলে দেওয়া হবে।” কিন্তু কবে? সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। গ্রামবাসীদের দাবি, ট্রান্সফর্মার বসানোর জন্য এক ঠিকাদার ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন। ওই টাকা দিতে না পারায় ট্রান্সফর্মার মেলেনি। স্টেশন ম্যানেজার অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ট্রান্সফর্মারের জন্য টাকা লাগে না। ফলে টাকা কেউ চাইতে পারে না।”
ওই অবস্থাতেও জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক নেতাদের হেলদোল নেই। তাঁরা ব্যস্ত ভোটে ও দলীয় কর্মসূচিতে। নবগ্রামের বিধায়ক তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য কানাইলাল মণ্ডল বলেন, “পঞ্চায়েত ভোট সেরে এখন আমি তামিলনাড়ুতে কৃষক সভার সম্মেলনে আছি। ফোনেই খোঁজ খবর নিয়ে ট্রান্সফর্মার বদলানোর চেষ্টা করব।” নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি, তথা কংগ্রেসের স্থানীয় ব্লক সভাপতি মির বাদাম আলি বলেন, “ভোট গণনা হোক। তার মধ্যে পুড়ে যাওায় ট্রান্সফর্মার বদলে ভাল ট্রান্সফর্মার না দেওয়া হলে বিদ্যুৎ দফতর ভাঙচুর করা হবে।” |