সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসার পথে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ছাত্রের। বুধবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ শহর লাগোয়া গোপালনগরে রঘুনাথগঞ্জ-উমরপুর রাজ্য সড়কের এই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম সুজন মণ্ডল (১২)। গোপালনগরের শ্রীকান্তবাটি হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এই ছাত্র ফরাক্কার অর্জুনপুরের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার
|
মৃত সুজন মণ্ডল |
পর উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে ও আগুন ধরিয়ে দেয় ওই বাসটিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজন অর্জুনপুরের বাসিন্দা হলেও সে রঘুনাথগঞ্জের খুড়িপাড়া গ্রামের মামারবাড়ি থেকে পড়াশোনা করত। বুধবার সকালে মামার কিনে দেওয়া নতুন সাইকেল নিয়েই স্কুলের পথে রওনা দিয়েছিল সুজন। স্কুল থেকে প্রায় ৪০ মিটার দূরে একটি যাত্রীবাহী বেসরকারি বাসের ধাক্কায় সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে সুজন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। এরপরই স্কুলের ছাত্র ও এলাকাবাসীরা বাসটিকে ঘরে ফেলে। সড়ক অবরোধ করে মৃতদেহ আটকে শুরু হয় বিক্ষোভ। এর মধ্যেই উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় বাসটিতে। |
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে থানা সত্ত্বেও পুলিশ এসে পৌঁছায়নি। তারা আসে দুর্ঘটনার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর। আর ধূলিয়ান থেকে দমকল আসে প্রায় দু’ঘণ্টা পর। ফলে মৃতদেহ ঘিরে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আর সড়ক অবরোধে নাজেহাল হতে হয় নিতাযাত্রীদের। ঘণ্টা তিনেক পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। তবে দুর্ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পুলিশ-প্রশাসনের দিকেই।
শ্রীকান্তবাটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল মণ্ডল বলেন, “বেপরোয়া যান চলাচলের জন্য গত তিন বছরে বলি হয়েছে স্কুলের তিন ছাত্র। সামনে স্কুল অথচ যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” |
উত্তেজিত জনতা পুড়িয়ে দিল বাস। |
স্কুলের পড়ুয়ারা জানায়, কয়েকদিনের জন্য স্কুলের সামনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হলেও পরে তা তুলে নেওয়া হয়। যানের গতি নিয়ন্ত্রণে স্কুলের ২০০ মিটারের মধ্যে বাম্প বসানোর দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “যানের গতি নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখা হচ্ছে।”
এ দিকে বাস পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আজ থেকে জঙ্গিপুরে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বাস মালিকেরা। বাস পোড়ানোর অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বেপরোয়া গতিতে বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুলিশের বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। |
ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়। |