ভোট মিটলেও বিরাম নেই সংঘর্ষের
ভোট পরবর্তী হিংসার বিরাম নেই।
বুধবার সকালে সাগরদিঘির বেলাইপাড়ায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক তৃণমূল সমর্থকের। মৃতের নাম উম্মদ শেখ (৪২)। তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন তৃণমূলের ৩ কর্মীও। তাঁদের সাগরদিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। সিপিএম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সিপিএমের দাবি, এলাকায় বোমা বাঁধার সময়ে তা ফেটে ৪ জন তৃণমূল কর্মী জখম হন। তার মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের চার কর্মী বোমা বাঁধছিল। বোমা ফেটে তারা গুরুতর জখম হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তার মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় সিপিএম কোনও ভাবে জড়িত নয়।” তৃণমূলের উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা পাল্টা বলেন, “সাগরদিঘিতে সিপিএম হারবে বলেই তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে। বিষয়টি পুলিশকে দেখার জন্য বলেছি।”
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম তৃণমূল কর্মীরা।
বেলাইপাড়া ও করিমপুরে গৌতম প্রামাণিক ও কল্লোল প্রামাণিকের তোলা ছবি।
বুধবার সকাল থেকে বেলাইপাড়ায় তৃণমূল-সিপিএমের মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, সিপিএম স্বীকার করেছে। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “এ দিন সকাল থেকে তৃণমূলের লোকজন এলাকায় বোমাবাজি করে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে আমাদের ৪ জন কর্মী-সমর্থক জখম হয়ে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে সিপিএমের লোকজনও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জখম হয়নি।”
বোমা ফেটে বুধবার বেলা এগারোটা নাগাদ খড়গ্রামের সাদল গ্রামের কংগ্রেস কর্মী নাদিউল সরকার জখম হয়েছেন। হাতুড়ে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ওই কংগ্রেস কর্মী বালতি ভর্তি বোমা নিয়ে পুকুরে যাচ্ছিল সেগুলি নিষ্ক্রিয় করতে। কিন্তু পুকুরপাড়ে আচমকা পা পিছলে পড়ে যায়। একটি বোমা ফেটে যায়। জখম হয় ওই যুবক। কংগ্রেসের দাবি, সিপিএম তাদের সমর্থককে বোমা ছুড়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, “নিজেদের মধ্যে অশান্তি করে আমাদের দিকে আঙুল তুলছে। পুলিশ তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে।”
অন্য দিকে ভোটপর্ব মেটার পর থেকেই খড়গ্রামের রহিগ্রামে কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসকদল অবশ্য অভিযোগের আমল দেয়নি। মঙ্গলবার রাতে এলাকায় পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
মুরুটিয়ার ব্রজনাথপুরে বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন পাঁচ কংগ্রেস সমর্থক। তাঁদের মধ্যে তিন জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার সকালের ওই ঘটনায় পুলিশ সাতজন সিপিএম সর্ংথককে গ্রেফতার করেছে। ওই গ্রাম থেকে মিলেছে আটটি সকেট বোমা। গত সোমবার ভোটের পর থেকেই সীমান্তের ওই গ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষ শুরু হয়। সোমবার রাতেই সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ উঠেছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে এ দিন সকালেই হোগলবেরিয়ার জয়রামপুরে সিপিএম ও তৃণমূলের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৬ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উভয় দল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
ভোট পরবর্তী হিংসা মিটতে না মিটতেই ফের মুর্শিদাবাদের ৯টি বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
পঞ্চায়েত দফতরের জেলা আধিকারিক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, “পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ভোটকর্মী সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিস থেকেই নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ভোটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ কর্মী নিয়োগের জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”
যদিও ২২ জুলাই ভোটগ্রহণের পরেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সশস্ত্র রাজ্য পুলিশের দল জেলা ছেড়ে চলে গিয়েছে। এই মুহূর্তে জেলায় বিএসএফের ৬০-৬৫ বাহিনী জওয়ান রয়েছে। সেই সঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে বুধবারই জেলায় এসে পৌঁছেছে ৫২ জনের কেন্দ্রীয় বাহিনীর একটি দল।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই বাহিনীকে ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বোমার আঘাতে নয়তো গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ডোমকল, রঘুনাথগঞ্জ, খড়গ্রাম, জলঙ্গি, ইসলামপুর, হরিহরপাড়া, কান্দি ও বেলডাঙা থানা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও জেলা পুলিশের ৬ জনের দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

আজ যে সব বুথে পুনর্নির্বাচন
নদিয়া
চাকদহ ব্লকের ২০৮/১ বুথের পুর্ননির্বাচন হবে। ভোট নেওয়া হবে বসন্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। করিমপুর-২ ব্লকের ৯৪ নম্বর বুথের পুর্ননির্বাচন হবে তিয়ারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

মুর্শিদাবাদ
রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের কানুপুর পঞ্চায়েতের ১১/১ সোনাটিকুরি প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে ভোটগ্রহণ হবে রঘুনাথগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির আসনের জন্য। এলাকার ভোটররা ওই বুথে ১টি মাত্র ভোট দেবেন। বাকি ৮টি বুথে অবশ্য গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদ আসনের জন্য ভোটগ্রহণ হবে। সেক্ষেত্রে ওই ৮টি বুথের ভোটাররা তিনটে করে ভোট দেবেন। ওই ৮টি বুথ হল
১) বেলডাঙা-১ ব্লকের বেগুনবাড়ি পঞ্চায়েতের ১৭ নম্বর মোহনপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্র
২) বেলডাঙা-১ ব্লকের বেগুনবাড়ি পঞ্চায়েতের ২২/১ কাজিশাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
৩) বেলডাঙা-১ ব্লকের বেগুনবাড়ি পঞ্চায়েতের ২২/২ কাজিশাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
৪) বেলডাঙা-২ ব্লকের আন্দুলবেড়িয়া পঞ্চায়েতের ১৫২ তেঘরি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
৫) নওদা ব্লকের বালি পঞ্চায়েতের ১৩১ হাজি সৈয়দ মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র।
৬) জলঙ্গি ব্লকের সাদিখাঁরদিয়াড় পঞ্চায়েতের ১১৫ হালদারপাড়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্র।
৭) জলঙ্গি ব্লকের চোঁয়াপাড়া পঞ্চায়েতের ১৪৮/২ সাহেবরামপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্র।
৮) রানিনগর-২ ব্লকের কালীনগর-২ পঞ্চায়েতের ৫০ কালীনগর সরকারপাড়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বুথে নতুন করে ভোটগ্রহণ নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.