ফের খুন হল চুঁচুড়া শহরে। বুধবার শহরের প্রাণ কেন্দ্র জিটি রোড লাগোয়া পর্তুগিজ স্মৃতিসৌধের ভিতরে সঞ্জয় নিয়োগী (৩০) নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। নিহতের বাড়ি চন্দননগর গঞ্জের বাজার এলাকায়। ওই যুবকের গলায় ও পেটে ধারাল অস্ত্রের কোপ ছিল। দু’হাত ও দু’পায়ের শিরাও কাটা ছিল। তার বিরুদ্ধে চন্দননগর থানায় নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরে খুন হয় ওই যুবক। তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রাতর্ভ্রমণে গিয়ে এলাকার কিছু বাসিন্দা ওই স্মৃতিসৌধের মধ্যে দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি জানাজানি হতে পুলিশ আসে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। |
দেহ উদ্ধারের পরে পর্তুগীজ স্মৃতিসৌধের সামনে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই স্মৃতিসৌধে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। নেশার আসর বসে। পুলিশ সব জেনেও কিছু দেখে না। তবে পুলিশের দাবি, রাতে ওই এলাকায় টহলদারি চলে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগেও চন্দননগর স্টেশন রোডের মধ্যাঞ্চল এলাকায় এক যুবককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সঞ্জয় সেই ঘটনায় জড়িত ছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাস কয়েক আগে শহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের কর্তারা একটি বিশেষ বাহিনী তৈরি করেন। তারপর ধড়পাকড় শুরু হয়েছিল। দুষ্কৃতীদের ধরতে হুগলি স্টেশন চত্বরে সমাজবিরোধীদের পোস্টারও সেঁটে দেয় পুলিশ। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, তার বেশি আর কিছুই হয়নি। এখন পরিস্থিতি ফের আগের মতো হয়ে গিয়েছে। সোমবারই চুঁচুড়া থানা এলাকায় ডানলপ ঘাট লাগোয়া এলাকায় লব পাণ্ডে নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি শ্রীরামপুরের শ্রীকৃষ্ণনগর এলাকায়। পুলিশের দাবি ছিল, তাকে খুন করা হয়েছে। সেই ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই ফের চুঁচুড়া থানা এলাকায় আরও একটি খুনের ঘটনায় স্বভাবতই উৎকণ্ঠিত বাসিন্দারা। গঙ্গার উপকন্ঠে এই জেলা শহরে পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, বর্ধমান রেঞ্জের ডিআইজি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর), জেলা জজ-সহ আরও নানান আইন ও প্রশাসনিক কর্তাদের সরকারি আবাসন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, এই কারণেই এই শহরে আইন শৃঙ্খলা জোরদার হওয়াটা জরুরি। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, আমলারাও শহরে নিরাপদ কিনা, এখন সেই প্রশ্নই উঠছে। |