গায়ে ছাই রঙা শার্ট আর কালো প্যান্ট। এ দিন আদালত কক্ষে আগাগোড়াই গোমড়া মুখে ছিলেন বছর সাতচল্লিশের এই অভিনেতা। দুই বোন অর্পিতা আর অলভিরাও এসেছিলেন দাদার সঙ্গে। তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা হয়েছে, দায়রা আদালতের বিচারক ইউ বি হেজিব তা পড়ে শোনান সলমনকে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) (অনিচ্ছাকৃত খুন), ২৭৯(বেপরোয়া গাড়ি চালানো), ৩৩৭(প্রাণসংশয় হতে পারে এমন ভাবে আঘাত করা), ৩৩৮(গুরুতর আঘাত করা), ৪২৭(সম্পত্তির ক্ষতি), মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো ও যান নিয়ন্ত্রণ আইন ভাঙা সব ক’টা অভিযোগই চুপচাপ শোনেন সলমন। যদিও বিচারকের সামনে দাবি করেন, কোনও দোষ করেননি তিনি।
আজ চার্জ গঠনের পর বিচারক জানান, আগামী মাসের ১৯ তারিখ হবে পরের শুনানি। তবে ব্যস্ততার কারণে সব ক’টি শুনানিতে তাঁর মক্কেল হাজিরা দিতে পারবেন না বলে আদালতে আবেদন করেছিলেন সলমনের আইনজীবী শ্রীকান্ত শিভেদ। তাঁদের সেই দাবি মেনে নিয়েছেন বিচারক। তবে জানিয়েছেন, কোনও বিশেষ দিনে হাজিরা দিতে বলা হলে আসতে হবে স্বয়ং অভিনেতাকেই।
সলমনের তরফে এ দিন চার্জ গঠন পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। যে বিচারকের অধীনে এই মামলা চলছে, ক’দিন পর বদলি হয়ে যাবেন তিনি। তাঁর জায়গায় আসবেন অন্য কোনও বিচারক। ফলে আজ চার্জ গঠন না হলে মামলাটি আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সরকারি কৌঁসুলি। তাঁরই আবেদনে প্রায় এক দশক পুরনো মামলার চার্জ গঠন হল আজ।
এ দিকে সুপারস্টারের হাতে এখন একাধিক ছবি। পরের পর ছবি ১০০ কোটির ক্লাবে নাম লিখিয়েছে। এই মুহূর্তে ভাই সোহেলের একটা ছবির কাজে ব্যস্ত সলমন। ছোট পর্দা, বড় পর্দা মিলিয়ে যে পরিমাণ কাজ জমে রয়েছে, সামনের ক’টা দিন ফুরসত মেলার জো নেই। তার মধ্যেই এই চার্জ গঠনের ফ্যাসাদে পড়লেও ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিচলিত নন বাবা সেলিম খান। ছেলের কাজে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই বিশ্বাস তাঁর।
সলমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনে নিজের হতাশা অবশ্য চেপে রাখতে পারেননি কংগ্রেস বিধায়ক বাবা সিদ্দিকি। তাঁর অভিযোগ, জনপ্রিয় হওয়ার মাসুল দিতে হচ্ছে সলমনকে। হতাশ সলমনের অগণিত ভক্তও। চার্জ গঠনের পরই পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্যে উপচে পড়ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক, টুইটার। কেউ কেউ এও লিখেছেন, চার্জ গঠন হতেই কেটে গেল ১১ বছর। সাজা শোনাতে হয়তো আরও বিশ বছর পেরিয়ে যাবে।
সবে দু’মাস হয়েছে আর্থার রোড জেলে গিয়েছেন বলিউডের আর এক অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। সেলিব্রিটি অপরাধীর তালিকা এ বার আরও বাড়তে চলেছে কি না, তা নিয়ে আলোচনার ঝড় এখন তুঙ্গে। যদিও সলমনের কাছে এ সব নতুন নয়। ’৯৮ সালে রাজস্থানের কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের মামলায় জেলে থেকেছিলেন তিন দিনের জন্য। এ যাত্রায় তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা সময়ই বলবে।
|