নিজে বিশিষ্ট চিকিৎসক। নিজের গায়ে আগুন লেগে যাওয়ার পরে প্রাথমিক চিকিৎসার চেষ্টা করেছিলেন নিজেই। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। শাড়িতে আগুন লেগে, নাকে-মুখে ধোঁয়া ঢুকে ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছেন ৮৮ বছরের ওই বৃদ্ধা। প্রাথমিক শুশ্রূষাটুকু করে নিজেই নার্সিংহোমে যাওয়ার ব্যবস্থা করলেও মৃত্যু হয় স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক শোভা ঘোষের। পরিবারের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে চেম্বার সেরে শোভাদেবী যখন ফেরেন, তখন বাড়িতে সত্যনারায়ণ পুজো হচ্ছিল। পরিচারিকাকে একটি কাজে বাইরে পাঠিয়ে ঠাকুরঘরের সামনে মোড়ায় বসে ধুনো দিচ্ছিলেন তিনি। পুরোহিত ছাড়া তখন বাড়িতে আর কেউ নেই। তখনই তাঁর শাড়িতে আগুন ধরে যায় বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসক মহুয়া চন্দ জানান, আগুন নেভাতে তিনি নিজেই স্নানঘরে গিয়ে স্নান করেন। কাউকে গোড়ায় কিছু বলেনওনি। স্নান সেরে ঘরে এসে শাড়ি ছেড়ে একটি ঢোলা নাইটি পরেন তিনি। পোড়ার মলমও লাগান। ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ অলকানন্দা গুহ বলেন, “পরিচারিকা বাড়ি ফিরলে উনি ইশারায় ফোন আনতে বলেন। নিজেই স্থানীয় এক নার্সিংহোমের নম্বরে ডায়াল করেন। ততক্ষণে ওঁর কাঁপুনি শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিচারিকাকে বলেন, ‘বাড়িতে চিকিৎসা করা যাবে না। আমাকে নার্সিংহোমে নিয়ে চলো।’ দোতলা থেকে হেঁটেই নীচে নেমে গাড়িতে ওঠেন শোভাদেবী।” ল্যান্সডাউনের এক নার্সিংহোমের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, শোভাদেবীর দেহের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। ঝলসে গিয়েছে মুখও। ওই নার্সিংহোমে বার্ন ইউনিট না থাকায় বালিগঞ্জের কাছে এক নার্সিংহোমে ভর্তি করার পরে মঙ্গলবার দুপুরে সেখানেই মৃত্যু হয় শোভাদেবীর। কী ভাবে অল্প সময়েই ৬০ শতাংশ পুড়ে গেল? চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগুনে ঝলসে যাওয়ার পাশাপাশি প্রচুর ধোঁয়া শোভাদেবীর ফুসফুসে ঢোকে। তা থেকেই পোড়ার হার বেড়ে গিয়েছে।” |