মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের সংঘর্ষে মৃত্যু হল জখম যুবকের। মৃতের নাম হুমায়ুন মীর (৩২)। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় জখম হয়েছেন গোলাম মীর নামে এক ব্যক্তি। তিনি বর্তমানে বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে রামপুরহাট থানার সইপুর গ্রামে। মৃতের পরিবারের দাবি, সিপিএমকে ভোট দেওয়ার অপরাধে তাঁদের উপরে আক্রমণ করে তৃণমূল। এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা আকবর আলির নেতৃত্বে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগও উঠেছে। এ ব্যাপারে মৃতের বোন জাসমিনা খাতুন ১৪ জনের বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় দাদাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে পুলিশ জনিয়েছে। বুধবার দুপুরে সইপুর গ্রামে যাওয়ার পথে দেখা মিলল আকবর আলির। তিনি এ বার ওই গ্রামের একটি সংসদের তৃণমূল প্রার্থী। আয়াষ অঞ্চলের প্রাক্তন প্রধান এই তৃণমূল নেতার দাবি, “পারিবারিক পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। সিপিএম কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ভিত্তিহীন।” |
পুলিশ পিকেট। —নিজস্ব চিত্র |
এলাকার বাসিন্দারা জানান, ওই পুকুরটি পাঁচ শরিকের। এ বার পুকুর দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন হুমায়ুনের পরিবার। ছিপ ভেঙে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মৃতের ভাই মনিরুল। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলে গ্রামের তালবোনা পুকুরে আত্মীয় আফসার মীরের ছেলে মিন্নার ছিপ দিয়ে মাছ ধরছিল। আমি ছিপ কেড়ে নিয়ে ভেঙে দিই।” তাঁর অভিযোগ, “এর পরেই ওরা পূর্ব আক্রোশ বশত আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় ফুলবাস মীর, মীর মহরম, সেতাব মীর, গোমাল মীররা। বাড়ি ফেরার পথে দাদকে ওরা লাঠি, রড দিয়ে আঘাত করে। ওই অবস্থায় ওরা দাদাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয়। ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ পৌঁছলে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাই। বর্ধমান মেডিক্যালে দাদার মৃত্যু হয়।” এ দিকে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাড়িতে গিয়ে তাঁদের দেখা মেলেনি। গোলাম মীরের বাড়ির মহিলা সদস্যরা জানালেন, তিন জন ওই পুকুরে ছিপ ফেলছিল। ওরা এক জনের ছিপ কেড়ে ভেঙে দেয়। মহরম মীরের সঙ্গে আসগর মীরের ঝগড়া বাধে। তখন আসগরের লোকেরা সেখানে চড়াও হয়। সংঘর্ষে গোলামের মাথায় লাঠির আঘাত লাগে।
সিপিএমের রামপুরহাট জোনাল কমিটির সদস্য তথা সইপুর এলাকার নেতা নাজমুল হোদার দাবি, “আসগরের পরিবার বরাবর সিপিএম সমর্থক। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরোধীতা করায় ওরা ঝামেলা করল।” যদিও তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।” |