বধূকে পুড়িয়ে মারার দায়ে চার জনের দশ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিল কালনা আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অখিলেশ পাণ্ডে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তেরা হলেন মৃতার স্বামী সফিকুল শেখ, শ্বশুর সৈয়ব শেখ, শাশুড়ি নুরজাহান বিবি ও জ্যেঠতুতো শাশুড়ি ছামিনা বিবি।
মন্তেশ্বরের মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা কেতাবুল শেখ ২০০৯ সালের ৮ মার্চ কালনা থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, সাড়ে তিন বছর আগে তাঁর বোন রুকসোনার সঙ্গে বিয়ে হয় কালনা ১ ব্লকের পাথরডাঙা গ্রামের সফিকুলের। যৌতুক হিসেবে বিয়েতে দেওয়া হয় নগদ ৪০ হাজার টাকা ও তিন ভরির গয়না। কিন্তু বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাতে খুশি হননি। তাঁরা অতিরিক্ত পণের জন্য রুকসোনার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যচারা শুরু করেন। কেতাবুলের দাবি, স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির নির্যাতনের হাত থেকে বোন যাতে রেহাই পায় সে জন্য মাঝে-মধ্যে তাঁরা টাকাও পাঠাতেন। |
আদালতের পথে। —নিজস্ব চিত্র। |
কেতাবুল অভিযোগ করেন, ২০০৯-এর ৭ মার্চ তাঁর বোনের উপরে অকথ্য অত্যাচার চালায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। খুনের হুমকি দেওয়া হলে রুকসোনা দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আল ধরে দৌড়তে থাকে। মাঠ থেকে তাঁকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যায় শ্বশুর ও শাশুড়ি। তার পরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সফিকুল। রুকসোনার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশী বকুল শেখ ছুটে যান। তিনিই তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৮ মার্চ হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জবানবন্দি দেন রুকসোনা। ১২ মার্চ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, ওই বধূ নির্যাতনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেন জবানবন্দিতে। চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় কুড়ি জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পরে এ দিন রায় ঘোষণা হয়। |