রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ, ভরা বর্ষায় জল জমে তা আরও বিপজ্জনক। শহরের ভেতরের কোনও রাস্তা নয় এমন হাল খোদ দুর্গাপুর শহরের মাঝ দিয়ে যাওয়া ২ নম্বর জাতীয় সড়কের। ফলে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াতে বিপাকে পড়ছেন বাসিন্দারা। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
শহরবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই জাতীয় সড়কের এমন দশা। সংস্কারে অভাবে খানাখন্দ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। তার উপর বৃষ্টি শুরুর সঙ্গেসঙ্গে গর্তে জল জমে পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে লরি, গাড়ি বা মোটরবাইক চলাচলে। দুর্গাপুরের সবচেয়ে ব্যস্ত অংশ দুবচুড়ুড়িয়া থেকে ভিড়িঙ্গি মোড়। একাধিক ভারি লরি ছাড়াও আসানসোল থেকে বেনাচিতিগামী বাস, বেনাচিতি বাজারে যাওয়ার গাড়ি, স্কুল বাস, মোটরবাইক চলাচল লেগেই থাকে এই রাস্তায়। অথচ মেন গেট, ওল্ড কোর্ট লাগোয়া রাস্তায় পিচ উঠে এবড়ো খেবড়ো হয়ে গিয়েছে। ডিভিসি মোড়েও আসানসোলের দিক থেকে গাড়িগুলি যেখানে সিগন্যালে এসে দাঁড়ায় সেখানে গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। |
রাস্তায় ভরা গর্ত। —নিজস্ব চিত্র। |
একই পরিস্থিতি এমএএমসি সংলগ্ন জাতীয় সড়কের উপরের মুচিপাড়া ব্রিজের। মুচিপাড়া রাস্তাতেও যেখানে সিগন্যাল না থাকলে গাড়িগুলি দাঁড়ায় সেই অংশ এবড়ো খেবড়ো। সব মিলিয়ে শহরের এক প্রান্তে গোপালমাঠ থেকে আরেক প্রান্তে মুচিপাড়া, মাঝে সিটিসেন্টার, ভিড়িঙ্গি, ডিএসপি টাউনশিপ-এই বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদেরই অভিযোগ, জাতীয় সড়কের বেহাল দশায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভারি গাড়ি চলাচলে কিছুদিন অন্তরই রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়। সে সব খানাখন্দে মাঝেমধ্যে তাপ্পি দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু তা নিতান্তই দায়সারা। তাপ্পি দেওয়া অংশগুলো বাকি রাস্তার তুলনায় উঁচু হয়ে যায়। ফলে চলতে চলতে আচমকা ঝাঁকুনির কবলে পড়ে গাড়ি। আর তাপ্পি সরে গিয়ে রাস্তাও আবার খন্দে পরিণত হয়। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, এমন রাস্তায় বিপদের ঝুঁকি তো আছেই, তাছাড়া গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হয়। বিপদ বাগ নামে এক চালক বলেন, “আমরা সপ্তাহে একাধিকবার এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি, তাই জানি কোথায় খন্দ আছে। কিন্তু নতুন চালকদের বেশ সমস্যা হয়।” মায়াবাজার থেকে প্রতিদিন দু’বেলা মোটর বাইক চড়ে মুচিপাড়া যাতায়াত করেন বিজয় অগ্রবাল। তিনি বলেন, “সামনে গর্ত দেখলে অনেক সময়েই আচমকা ব্রেক কষতে হয়। পিছনে হয়তো তখন কোনও দ্রুতগতির ট্রাক ছুটে আসছে। ট্রাকের চালক সতর্ক না থাকলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।” তিনি আরও জানান, এমএএমসি এবং মুচিপাড়া সংলগ্ন ব্রিজের উপরে যেভাবে গর্ত তৈরি হয়েছে তাতে হঠাৎ কেউ গিয়ে সেই খন্দে পড়লে বেসামাল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের সমস্যার কথা ভেবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তার বেহাল অংশ সংস্কার করার আর্জি জানানো হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। রানিগঞ্জের দিক থেকে কাজ চলছে। শীঘ্র দুর্গাপুরের অংশও সংস্কার করে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। |