বৃষ্টি হচ্ছে কম, দেরি তাই আমনের চাষে
বৃষ্টি হচ্ছে অনিয়মিত। কখনও ভারী বৃষ্টি। আবার কখনও একেবারেই শুকনো। এই আবহাওয়ার জন্য বীজতলা থেকে আমন ধানের চারা মূল জমিতে পোঁতার (আবাদের) কাজ করা যাচ্ছে না।। সমস্যা হচ্ছে পাট চাষেরও, এমনই দাবি করলেন কালনা মহকুমার চাষিদের একটি বড় অংশ। কৃষি বিশেষজ্ঞ তথা কালনা মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষের দাবি, বেশি বয়সের চারা থেকে পাশকাঠি বের হয় কম। স্বাভাবিক ভাবেই তাই ফলন কমে যায়। মহকুমা কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, কালনা মহকুমায় আমন ধানের চাষ হয় প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মন্তেশ্বর ব্লকেই ২২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয় আমনের। সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে চাষিরা আমনের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেন। বীজতলা তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায় জুন মাসে।
বৃষ্টির অভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে জমিতে।—নিজস্ব চিত্র।
এ বছর কালনা মহকুমায় মে মাসের মাঝামাঝি এবং জুন মাসে ভাল বৃষ্টি হলেও, জুলাইয়ের শুরু থেকে কমতে থাকে বৃষ্টির পরিমাণ। ফলে এ বার চাষিরা যখন চারাগাছ রোপণ করেন, সেই সময় বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়। অসুবিধায় পড়েন ওই চাষিরা। কালনা মহকুমার কৃষি খামারের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত কালনা মহকুমায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৬৩.৯ মিলিমিটার। ১৯ তারিখ পর্যন্ত পূর্বস্থলী ১ ব্লকে বৃষ্টি হয়েছে ৩৪.৪ মিলিমিটার। পূর্বস্থলী ২ ব্লকে বৃষ্টি হয়েছে ৪৬.৭ মিলিমিটার এবং মন্তেশ্বরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৬.০ মিলিমিটার। অথচ কালনা ১ ব্লক, পূর্বস্থলী ১ ব্লক, পূর্বস্থলী ২ ব্লক ও মন্তেশ্বর ব্লকে ২০১১ এবং ২০১২ সালের জুলাইয়ে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২০০ মিলিমিটারের বেশি। চাষিদের দাবি, বীজতলায় চারাগাছ তৈরি হয়ে গেলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে মূল জমিতে ধানচারা পোতার কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে দেরি হচ্ছে আমনের চাষে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বর্ধমান জেলার ১০ শতাংশ জমিতে আবাদের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কালনা মহকুমায় এই হার ১২ শতাংশের বেশি।
যে সমস্ত চাষি ইতিমধ্যেই আবাদের কাজ শেষ করেছেন এবং যারা এখনও কাজ শেষ করে উঠতে পারেননি, সমস্যায় পড়েছেন দু’ধরনের চাষিরাই। কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকার চাষি পরিমল ঘোষের কথায়, “১৪ বিঘা জমির মধ্যে মাত্র ২ বিঘা জমিতে ধানচারা রোপণের কাজ শেষ করা গিয়েছে। এর ফলে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে জমিতে লম্বা লম্বা ফাটল দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।” রোপণ করে নেওয়ার পর চারাগাছ বৃষ্টি পাচ্ছে না। তাই ফাটল। মন্তেশ্বরের এক চাষি আকবর শেখ বলেন, “সাধারণত ৪ সপ্তাহের মধ্যে বীজতলায় চারা তৈরি হয়ে যায়। এর পর থেকে চারা মূল জমিতে রোপন করা হয়। এ বার অনেক বীজতলাতেই চারার বয়স ৬ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। জলাভাবে বীজতলা থেকে চারা মূল জমিতে রোপন করা যায়নি।” কালনা মহকুমার এক কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক পরিমল দাস জানান, ধানচারার বয়স বেশি হলে সে চারা থেকে পরবর্তী কালে যে গাছ হয়, তাতে ফলন কমে যায়। শিষে শস্যদানা কমে যায়, এমনই মত পরিমলবাবুর।
পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ার ফলে ক্ষতি হচ্ছে পাট চাষেও, জানিয়েছেন পাটচাষিরা। জলাশয়গুলিতে যথেষ্ট পরিমাণ জল না থাকায় চাষিরা পাট কাটার কাজ আরম্ভ করতে পারছেন না। নান্দাই এলাকার পাটচাষি নবি শেখের বক্তব্য, “ভেবেছিলাম পাট কেটে তড়িঘড়ি জমিতে ধান চাষ করব। এখনও পর্যন্ত তা আর হল কই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.