বুথ দখল থেকে ছাপ্পা, একই ছবি কালিয়াচকে
বুথ দখল, ছাপ্পা ভোটপুরানো ছবি একটুও বদলায়নি কালিয়াচকে।
সোমবার একই দৃশ্য দেখা গেল নওদা যদুপুর অনুপনগর, খিকিরবোনা, জগদীশপুর, সুকদেবপুর, কাশিমনগর, জালুয়া বাঁধালের গঙ্গনারায়নপুর ও মোজমপুরে। বহু জায়াগাতেই কংগ্রেস, সিপিএমের এজেন্টদের দেখা মেলেনি। এই দুই দলের অভিযোগ, এজেন্টদের তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বসতেই দেয়নি। নিজেদের এজেন্ট রেখে তৃণমূল ছাপ্পাভোট দিয়েছে। চরম উত্তেজনা প্রবণ বুথ হিসাবে ঘোষণা করা হলেও মোজমপুরে বুথে আধা সামরিক বাহিনীর দেখা মেলেনি। শুধু তাই নয়, বুথের ভিতরে খোলা জানলাও দেখা দিয়েছে। হানাহানির রাজনীতি থেকে ছাড় মেলেনি নিরপরাধ শিশুদেরও।
মালদহের বামনগোলা বুথে ধীরে ধীরে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলায় অধৈর্য
হয়ে লাইনেই বসে পড়েছেন ভোটারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটগ্রহণ চলাকালীন সকাল ১০টা নাগাদ কালিয়াচকের বীরনগর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের লালুটোলার নতুনহাট গ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী সেরিনা সুলতানার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে তিনটি শিশু জখম হয়। শিশুগুলির মধ্যে প্রার্থীর ছয় বছরের ছেলে আবদুল আজিজের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “আমাদের দলের প্রার্থী ও তাঁর পরিবার ভোট দিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা বাড়িতে দুটি বোমা মারে। বিস্ফোরণে তিনটি নিরপরাধ শিশু জখম হয়েছে”
মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “কালিয়াচক জুড়ে তৃণমূল সন্ত্রাস চালিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসর প্রার্থী নিজের বাড়িতেই বোমা রেখেছিল। খেলার বল ভেবে তার ছেলে-সহ তিন শিশু বিস্ফোরণে জখম হয়েছে।” তবে জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বোমা মারা হয়েছে না তা রাখা অবস্থায় ফেটেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাকা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম শিশুদের নাম আবদুল আজিজ, মামন শেখ এবং আফসানা খাতুন। জখম মামন শেখ ও আফসানা খাতুনের মা সাজেরা বিবি বলেন, “ভোট দিতে বাড়ির সবাই বুথে গিয়েছিলাম। আমার ছেলেমেয়ে বড় জায়ের এক ছেলের সঙ্গে বাড়িতে খেলা করছিল। ভোট দিয়ে বাড়িতে ঢুকতে যাব তখনই বোমার শব্দ। দৌড়ে গিয়ে দেখি উঠোনে তিন জন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।”
সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় জুনিয়র বেসিক প্রাইমারি স্কুলে নিজের ভোট দেন আবু হাসেম খান চৌধুরী। কালিয়াচকে মোজমপুর, নওদা যদুপুর, জালায়াবাঁধাল তৃণমূল বুথ দখল করছে বলে তাঁকে জানান দলের নেতা-কর্মীরা। এর পরে তিনি কালিয়াচকের মোজমপুর ও নওদা যদুপুরে চলে যান। অন্যে নিবার্চনী ক্ষেত্রে যাওয়ার অভিযোগে খোদ সদর মহকুমা শাসক পুষ্পেন্দু মিত্র কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিবার্চন বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারে কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বলেছেন, “অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে পাঠানো হয়েছে।”
কালিয়াচকের মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে নিজেদের দখলে রেখেছিল সিপিএম। যার নেতৃত্বে সিপিএম ঘাঁটি তৈরি হয়েছিল এলাকায়, সেই আসাদুল্লা বিশ্বাস কয়েকমাস আগে তৃণমূলে যোগ দিতেই পালাবদল’। লাল দুর্গ সুবজ রঙে ভরে ওঠে। ফলস্বরূপ ভোটের আগেই মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পুরোপুরি তৃণমূলের দখলে। একইভাবে নওদা যদুপুরের প্রভাবশালী নেতা সিপিএমের বকুল শেখকে দলে টেনে নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে।
কালিয়াচক-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে ৫টি আসনে প্রার্থী দিতেই পারেনি কংগ্রেস, ও সিপিএম। এদিন এলাকায় জেলা পরিষদের ১টি আসন এবং পঞ্চায়েতে সমিতির ২টি আসনে খালি ভোট হয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “একসময়কার সিপিএমের গুণ্ডাদের দিয়ে তৃণমূল মোজমপুর এবং নওদা যদুপুর দখল করেছে। এ দিন ভোটের নামে প্রহস হয়েছে।”
আর সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “শুধু বলব জেলা পরিষদ দখল করতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল সন্ত্রাসের রাস্তা বেছেছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল জেলা সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “আমরা এলাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছি। যাঁরা প্রার্থী দিতে পারেনি, এজেন্ট দিয়ে কী করবে? তৃণমূল কোনও সন্ত্রাস করেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.