আসানসোল হাসপাতাল
নিরাপত্তা নেই, পুলিশ পাহারা চান ডাক্তারেরা
নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে একটি পুলিশ পোস্ট বানানোর দাবি তুলেছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের অভিযোগ, কথায় কথায় হুমকি, গালিগালাজ, শারীরিক নিগ্রহ, ভাঙচুর হাসাপাতালে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রবিবারও এক প্রসূতীর মৃত সন্তান প্রসবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ভাঙচুর হয়। এরপরেই হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জোরালো দাবি তোলেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি সমর্থন করেছেন হাসপাতালের সুপারও। তিনি মহকুমা প্রশাসনের এ নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। পুলিশের কাছেও তিনি বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন।
চিকিৎসকদের অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁদের নিরাপত্তার অভাবের মধ্যেই কাজ করতে হয়। দিনের আলোয় অপ্রীতিকর ঘটনা কোনওরকমে ঠেকানো গেলেও রাতের মহকুমা হাসপাতাল কার্যত অপরাধীদের অবাধ বিচরণভূমি হয়ে ওঠে। যেখানে সেখানে মদ-জুয়ার আসর বসে বলেও অভিযোগ। তবে এরা সকলেই বহিরাগত। সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, তাঁদের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী থাকায় দুষ্কৃতীরা হাসপাতাল ভবনের মধ্যে ঢুকতে পারে না। কিন্তু ফাঁকা হাসপাতাল চত্বর এদের আড্ডার মূল জায়গা। নিখিলবাবুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর থেকে শুরু করে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহের সব ঘটনাতেই এই বহিরাগত সমাজবিরোধীরা জড়িত। পান থেকে চুন খসলেই এরা রোগীর আত্মীয় পরিজনদের পক্ষ নিয়ে দাদাগিরি চালায়। তাঁর আরও অভিযোগ, প্রতিদিনই কয়েকজন বহিরাগত হাসপাতাল চত্বরের ফাঁকা জমিতে যেখানে সেখানে বড় গাড়ি রাখছে। প্রতিবাদ করলে এরা মারমুখী হয়ে ওঠে। অথচ এই চত্বর পেরিয়েই চিকিৎসক ও মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। তাঁরা রীতিমতো ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন। নিখিলবাবু বলেন, “এই সমস্যার কথা জানিয়ে মহকুমা প্রশাসনকে বহুবার ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হচ্ছে না। এমন চললে চিকিৎসা বিঘ্নিত হবে।
রবিবারের ঘটনার পরে সোমবারও নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি কী তা জানতে চাওয়া হলে তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসকদের সংগঠন প্রগেসিভ অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টরস-এর নেতা ললিত রায় বলেন, “এমন ঘটনা প্রায় রোজই ঘটছে। আগেও বহুবার প্রশাসনের কাছে পুলিশ পোস্ট বসানোর দাবি জানিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি। সোমবারেও হাসপাতাল সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে যারা ভাঙচুর করে তারা সমাজবিরোধী ছাড়া অন্য কিছু নয়। এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বাম প্রভাবিত অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস অ্যান্ড ডক্টরস-এর নেতা ইন্দ্রজিৎ মহন্তও বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ পোস্ট বসানো ছাড়া সমাজবিরোধীদের হাত থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা বা হাসপাতাল কিছুই বাঁচবে না। চিকিৎসক নিগ্রহে সরকার যে আইন প্রণয়ন করেছে তা অবিলম্বে কার্যকরী হওয়া উচিত।” সুপার নিখিলবাবুও মনে করেন, সমাজবিরোধীরা হামলা চালিয়ে পুলিশ আসার আগে সরে পড়ে। হাসপাতালে পুলিশ পোস্ট থাকলে ওরা সেই সাহস দেখাতে পারবে না। রবিবারের ঘটনার পরই এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহকুমা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। হাসপাতালের এই দুর্দশার কথা তিনি একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন। অমিতাভবাবু বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের কাছেও লিখিত ভাবে হাসপাতালে পুলিশ পোস্ট বসানোর আবেদন করতে চলেছি।” আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশকুমার বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। তিনি ফিরে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.