দূষিত জলেই পেটের রোগ
দূষিত জল থেকে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে জেলায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গত তিন সপ্তাহে দু’শো জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বেসরকারি মতে ডায়েরিয়া আক্রান্ত চারশোর বেশি। রোগের কারণ খুঁজতে নেমে বিভিন্ন জায়গার জলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পানের অযোগ্য। সাধারণত, ডায়েরিয়া আক্রান্ত এলাকা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ল্যাবরেটরিতে। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, যে সব এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকার জল পানের অনুপযুক্ত! জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার অবশ্য দাবি, “চিন্তার কিছু নেই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। এলাকায় মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যদি ১০ বা তার বেশি হয়, তাহলেই সেই জল খাওয়ার অযোগ্য বলে ধরা হয়।
ছড়াচ্ছে ডায়েরিয়া
ব্লক আক্রান্ত
কেশপুর ৮৪
মেদিনীপুর সদর ৫৫
চন্দ্রকোনা ২ ১৮
সবং ১২
শালবনি
ঘাটাল
দাসপুর ২
রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, যে সব এলাকা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকার প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ২০০ বা তার বেশি!” তাঁর আরও বক্তব্য, “আমরা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নিয়েছি। জল পরিস্রুত রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে।”
সম্প্রতি, কেশপুরের ঝেঁতলা, সরিষাখোলা এবং ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ডায়েরিয়া ছড়ায়। কেশপুরের ওই এলাকায় স্বজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে জল সরবরাহ হয়। জল সরবরাহের পাইপ লাইনে কিছু জায়গায় ফুটো থাকায় বাইরের নোংরা পাইপে ঢুকত। ফলে, জল দূষিত হত। এখন অবশ্য পাইপ মেরামতির কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত ওই এলাকায় ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত ১৪ জন কেশপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, দাসপুর ২, সবং, শালবনি, মেদিনীপুর সদর, চন্দ্রকোনা ২ এবং কেশপুর থেকেই এখনও পর্যন্ত ডায়েরিয়া আক্রান্তের খবর এসেছে। গত মে-জুন মাসে প্রথম ডেবরা, মেদিনীপুর সদর সহ জেলার কিছু এলাকায় ডায়েরিয়া ছড়ানোর খবর পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকে নতুন নতুন এলাকায় এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
ডায়েরিয়া ছড়ানোর পেছনে দূষিত জলই দায়ী বলে মনে করছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের এক কর্তার কথায়, “দূষিত জল থেকেই এই পরিস্থিতি। তবে, শুধু পাইপ লাইনই দায়ি নয় এর জন্য অন্য কারণও দায়ি।” কারণগুলি ঠিক কী? ওই কর্তার বক্তব্য, “দূষিত পুকুর বা নলকূপের জল থেকেও রোগ ছড়াচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ এই দূষিত জলই ব্যবহার করায় অসুস্থতা বাড়ছে।” জেলার একাংশে নিবিড় স্বাস্থ্য বিধান কর্মসূচি সে ভাবে রূপায়িত হয়নি বলেও মানছেন তিনি। ফলে বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে শৌচাগার না থাকার ফলেও দূষণ ছড়াচ্ছে।
ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর গ্রামে গ্রামে দূষিত জল ব্যবহার না করার জন্য প্রচার চালাচ্ছে। যাঁরা ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে কি না, তাও নজরে রাখা হচ্ছে। যদিও ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিপরীত চিত্র ধরা পড়ছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কথাতেই। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, “আক্রান্তদের চিকিৎসা সঠিক ভাবে হচ্ছে। চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা সঠিক ভাবে কাজ করছেন। সেই জন্য এতো মানুষ ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হলেও কারও মৃত্যু হয়নি।” যদিও অন্য এক কর্তার উদ্বেগ, “কিছু এলাকা থেকে এক একজন করে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। এটাই চিন্তার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.