গোলমালের চেনা ছবিই সগুনায়
চেনা ছবিটাই দেখল সগুনা। নদিয়ার বামদুর্গের অন্যতম এই বড় কক্ষে বুথের সামনে ফাটল বোমা। গাড়ি থেকে আটক হল ব্যাগ ভর্তি বোমা। উঠল বুথ দখলের অভিযোগ। ফের নির্বাচনের কথা জানিয়েছে কমিশন।
কোথাও ভোট না দিতে পারা, কোথাও আগেই ভোট পড়ে যাওয়াএমনই নানা অভিযোগ উঠল এ দিন সগুনায়। ভোটারদের বাড়ি থেকেই বেরোতে দেওয়া হয়নি, ভোটকেন্দ্রের কাছ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছেএমন সব অভিযোগও উঠেছে। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের এলাকা দখলের অভিযোগও উঠেছে। তবে সবই মৌখিক অভিযোগ। ভোটের ছবি অবশ্য পাল্টায়নি এখানেই। ২০০৩ বা ২০০৮ সালেও সগুনায় একই ভাবে ভোট হয়েছে। বদলেছে শুধু পতাকার রঙ।
পাকড়াও। সোমবার সগুনায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
পতাকায় লালের বদলে সোমবার সগুনায় দেখা গিয়েছে ঘাসফুল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনভর নির্বাচন কমিশনার নিজে সগুনার খবর নিতে প্রশাসনের কর্তাদের ফোন করেছেন। শেষ পর্যন্ত খোদ নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সেলিম নির্বাচন চলাকালীন দীর্ঘ সময় কাটান সগুনায়। বুথে বুথে ঘুরে অবাঞ্ছিত লোকেদের সরিয়ে দেন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু সবটাই সাময়িক। প্রশাসনের কর্তারা যে পথ দিয়ে গিয়েছেন, সেখানে সব কিছুই ঠিকঠাক, তবু কোথাও যেন ভীষণ গোলমেলে। সগুনার গ্রিন বেল্ট কলোনিতে ভোটকেন্দ্রে বাইরের লোকেদের দেখে বিরক্ত জেলাশাসক তাদের ধরার নির্দেশ দেন পুলিশকে। বেলা ১টা নাগাদ আনন্দনগরে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্র প্রায় ফাঁকা। বাইরে ফ্রায়েড রাইস ও চিলি চিকেন নিয়ে বহিরাগতদের ‘পিকনিক’ চলছে। পুলিশ তাড়া করলে তারা কিছুটা দূরে সরে যায়। জেলাশাসকের কনভয় বেরিয়ে যেতেই ফের ভোটকেন্দ্রের বাইরে পিকনিক বসে। অভিযোগ, এই কেন্দ্রও ছাপ্পা ভোট পড়েছে দেদার।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেয়ে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি বুঝেছেন বলেই হয়তো বারবার খোঁজ নিয়েছেন সগুনার। কিন্তু আপাতভাবে তো কোনও সমস্যা ছিল না।” এর পরেই তাঁর মন্তব্য, “অনেকটা শ্মশানের শান্তির মতো। অভিযোগ নেওয়ার লোক আছে, করার লোক নেই।’’ এখানকার ক’টি বুথে ফের ভোটের দাবি জানানো হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে সিপিএম ও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে এ দিন সকালে সগুনার বসন্তপুরে যে বুথের বাইরে বোমা ফেটেছিল ও গাড়িতে বোমা ভর্তি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছিল, সেই ২৪১ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
হরিণঘাটার একটি বুথে ভুল ব্যালটে ভোট শুরু হওয়ার পরে সাময়িক ভাবে ভোট বন্ধ হয়ে যায়। ফের ব্যালট পাঠিয়ে ভোট করানো হয় সেখানেও। সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা হরিণঘাটার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের দাবি, ‘‘ভোট শুরুর আগেই তো তৃণমূল জিতে বসে আছে। অন্য জেলার বাইক বাহিনী ভয় দেখিয়ে ভোটারদের বেরোতে দেয়নি। প্রার্থী, এজেন্ট ঘরছাড়া ভোটের আগেই। যারা গিয়েছিল তাদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। বেলা ১২টার মধ্যেই তো অনেক বুথে ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। বহু সংবেদনশীল বা অতি সংবেদনশীল বুথে আধা-সামরিক বাহিনী ছিলই না। এ কেমন নির্বাচন? সগুনা, হরিণঘাটা কোথাও সার্বিক ভোট হয়নি।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন ৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা আর বসন্তপুরের ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা চাকদহের বিধায়ক নরেশ চাকীর দাবি, “এত ভাল ভোট আগে কখনও হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.