|
|
|
|
নিত্য ভোগান্তি লালগড়ে |
বাসস্ট্যান্ড হয়নি, সেই মাঠেই হেলিপ্যাড |
কিংশুক গুপ্ত • লালগড় |
বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু চালু হয়নি। ফলে, প্রতিদিনই কয়েক হাজার যাত্রীকে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই ছবি জঙ্গলমহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্লক-সদর লালগড়ের।
বছর তেরো আগে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে লালগড় থানার পাশে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, শৌচাগার-সহ একটি কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডটি নির্জন এলাকায় হওয়ায় প্রথমে সেখানে যেতে আগ্রহ দেখাননি বাস মালিকেরা। পরে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় থানার পাশে বাসস্ট্যান্ড চালু করা নিয়ে পুলিশেরই একাংশ আপত্তি জানায়। তাই সেই বাসস্ট্যান্ড এখনও চালু হয়নি। উল্টে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠটি এখন হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশ-প্রশাসন। |
|
লালগড়ের সেই পরিত্যক্ত বাসস্ট্যান্ড। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
লালগড় ব্লক-সদরকে কেন্দ্র করে মেদিনীপুর, গোয়ালতোড়, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া রুটের ২০ জোড়া বাস প্রতিদিন যাতায়াত করে। লালগড়ের উপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে হাজার দু’য়েক যাত্রী যাতায়াত করেন। নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড না-থাকায় লালগড়ের লাইব্রেরি চক, হাটচালা বাজার কিংবা এসআই চকের মতো জনবহুল রাস্তায় যত্রতত্র বাসগুলি দাঁড়িয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বাসস্ট্যান্ড ও শৌচাগার না-থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন দূরের যাত্রীরা।
‘লালগড়-মেদিনীপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক নরেশ পাত্র বলেন, “রোজ গড়ে ৪০টি বাস লালগড় ছুঁয়ে যাতায়াত করে। বাসস্ট্যান্ড না থাকায় যাত্রীদের সঙ্গে বাস-কর্মীদেরও সমস্যা হয়। অপরিসর রাস্তায় বেশিক্ষণ বাস দাঁড় করানো যায় না। নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড থাকলে বাসগুলি বেশি সময় অপেক্ষা করে বেশি যাত্রী তুলতে পারত। কিন্তু সেটা না হওয়ায় আখেরে বাসগুলিরই লোকসান হচ্ছে।”
জঙ্গলমহলের অশান্তি পর্বে লালগড়ই ছিল মাওবাদী-জনগণের কমিটির আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি। বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে লালগড়ে নানা ধরনের উন্নয়ন-কাজ চলছে। লালগড় থেকে বিনপুর ও ঝাড়গ্রামের যোগাযোগ সহজ করার লক্ষ্যে লালগড়ের আমকলা ঘাটে কংসাবতীর উপর সেতু তৈরি করা হচ্ছে। সেতু হয়ে গেলে বাসের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে দাবি বাস-মালিক সংগঠনের নেতা নরেশবাবুর। গাঁ-গঞ্জের বাসিন্দাদের কাছে প্রধানতম পরিবহণ হল বাস। অথচ লালগড়ে বাসস্ট্যান্ড করার ব্যাপারে পঞ্চায়েত-প্রশাসন কারোরই হেলদোল নেই বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। বিনপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তৃণমূলের তারাচাঁদ হেমব্রম বলেন, “থানার পাশের বাসস্ট্যান্ডটি বাম জমানায় সিপিএমের ক্ষমতাসীন জেলা পরিষদ গঠন করেছিল। নতুন করে বাসস্ট্যান্ড তৈরির বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভায় আলোচনা হয়েছে। নির্বাচিত নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমি আশাবাদী।”
আশা দিচ্ছেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক সুকুমার হাঁসদাও। তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করব।” |
|
|
|
|
|