কেমন হল ইস্টবেঙ্গলের নতুন মরসুমের দল? গত তিন বছরে তিনি লাল-হলুদকে আটটা ট্রফি দিলেও, আই লিগ দর্শন করাতে পারেননি। তাঁর উত্তরসুরি মার্কোস ফালোপা কি পারবেন সেই অধরা স্বপ্ন মেটাতে? সোমবার মরিশাস থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে ই-মেলে আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান।
প্রশ্ন: ইস্টবেঙ্গলের নতুন দল সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন?
মর্গ্যান: কেন নেব না? আমি জানি এই বছর ইস্টবেঙ্গল খুব ভাল দল তৈরি করেছে। স্বদেশি ফুটবলাররা তো বটেই, যে সব বিদেশিকে রিক্রুট করেছে, তারাও বেশ ভাল। পুরো মরসুম ইস্টবেঙ্গলের প্রোগ্রেস-চার্টের উপর নজর রাখব।
প্র: জেমস মোগা এবং সুয়োকা দু’জনকেই গতবার আই লিগে দেখেছেন। কেমন হবে যুগলবন্দি?
মর্গ্যান: মোগা খুব বুদ্ধিমান স্ট্রাইকার। বল কন্ট্রোলও ভাল। গতবার পুণে এফসি-তে যে ফুটবলটা খেলেছে, সেটা ও এ মরসুমে খেলতে পারলে ইস্টবেঙ্গলে ট্রফির অভাব হবে না। কিন্তু ওকে মাঝমাঠ থেকে ঠিকঠাক বল বাড়াতে হবে। আমার ধারণা, সুয়োকা সেই কাজটা খারাপ করবে না!
প্র: আপনার দলের প্রধান কারিগর পেন ওরজি এ বার মহমেডানে। এটা কি ইস্টবেঙ্গলকে কোনও ভাবে ভোগাতে পারে?
মর্গ্যান: যে নেই তাঁকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
প্র: তিন বছর এক জন ইংলিশ কোচের অধীনে খেলার পরে এ বার এক জন ব্রাজিলিয়ান কোচ খেলাবেন মেহতাবদের। সাম্বা-ম্যাজিকে কতটা পার্থক্য হবে?
মর্গ্যান: আমি কোনও দিন ব্রাজিলে যাইনি। সেখানে কী ভাবে ফুটবল শেখানো হয়, সেটাও জানি না। তবে একটা কথা বলতে পারব। ব্রাজিল-সাম্বা বা ইংলিশ লং বল থিওরি কিছুই টিকবে না ইস্টবেঙ্গলে। এখানে ক্লাব-কর্তা থেকে সমর্থক সবাই একটা জিনিসই জানে। ট্রফি। কোচ কোন দেশ থেকে এসেছে? তার কোচিং স্টাইল কী? ফমের্র্শন? কিছুই এখানে কাজে দেবে না। তোমাকে শুধু প্রত্যেকটা ম্যাচ জিততে হবে। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন!
প্র: এই থিওরি তো পৃথিবীর সব ক্লাব, সব দেশেই প্রযোজ্য...
মর্গ্যান: হতে পারে। সেখানে অনেকগুলো ব্যাপার কাজ করে। তবে সেগুলোকে টেনে আর বিতর্ক বাড়াতে চাই না। |
প্র: আপনার মন্তব্যের মধ্যে কি নতুন কোচের (মার্কোস ফালোপা) জন্য পরামর্শ লুকিয়ে না সতর্কবার্তা?
মর্গ্যান: কোনওটাই না। আমি মার্কোস ফালোপাকে চিনি না। তাকে শুধু শুধু পরামর্শ দিতে যাব কেন? ওটা আমার কাজ নয়।
প্র: ভারত ছাড়ার পরে ইস্টবেঙ্গলের কোনও ফুটবলারের সঙ্গে যোগাযোগ আছে আপনার?
মর্গ্যান: হ্যাঁ, অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে।
প্র: কোনও পরামর্শ দিলেন?
মর্গ্যান: গত তিন বছর ধরে ক্লাবের টানা সাফল্যের পিছনে আসল নায়ক তো আমার ফুটবলাররাই। আমার দলের প্রত্যেকেই নিজের নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে খুব সিরিয়াস। ওদের আলাদা করে পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমার বিশ্বাস, নতুন মরসুমেও ওরা প্রচুর সাফল্য পাবে।
প্র: দেশে ফিরে কী করলেন?
মর্গ্যান: চুটিয়ে ঘুরলাম। বৌয়ের সঙ্গে প্রথমে গ্রেট ব্রিটেনে খুব কাছের এক আত্মীয়ের বাড়িতে কিছু দিন ছিলাম। তার পর ওখান থেকে ১০ দিনের মরিশাস ট্যুর। দারুণ মজা করেছি।
প্র: কোনও ক্লাবে কোচিংয়ের প্রস্তাব পেলেন?
মর্গ্যান: এখনও পাইনি। আমি নিজেও যোগাযোগ করিনি। আরও বেশ কিছু দিন পরিবারের সঙ্গেই কাটাতে চাই।
প্র: ভারতে আইএমজি লিগ হচ্ছে। শুনেছেন?
মর্গ্যান: খুব এক্সাইটিং চিন্তাধারা। টুর্নামেন্টটাকে যদি আইপিএল ক্রিকেটের ধাঁচে করতে পারে, তা হলে বড় সাফল্য আসবে। কিন্তু তার জন্য প্রত্যেকটা গ্রুপ যারা ভারতীয় ফুটবলকে পরিচালনা করে, তাদের একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। মতবিরোধ হলে সাফল্য পাওয়া খুব কঠিন।
প্র: আইএমজি থেকে কোচিংয়ের কোনও প্রস্তাব পেয়েছেন?
মর্গ্যান: আমার সঙ্গে আইএমজি-র কোনও কর্তা কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজির কথা হয়নি। তবে ভারতের কোনও ক্লাব যদি আমাকে কোচিংয়ের প্রস্তাব দেয়, নিশ্চয়ই ভেবে দেখব। |