রেসকোর্স এলাকায় আড়াই বছরের একটি মেয়েকে যৌন নিগ্রহের পরে শ্বাসরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে খুনের অভিযোগে সোমবার এক সহিসকে গ্রেফতার করেছে হেস্টিংস থানার পুলিশ। সুরেশ পাসোয়ান (৩৫) নামে ওই যুবক রেসকোর্সেরই সহিস। ঘটনার পরে সে বিহারের বৈশালীতে নিজের গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে ছিল। এ দিন সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার ভোরে রেসকোর্সের বাইরে একটি নালা থেকে ওই শিশুটির গলা কাটা দেহ উদ্ধার করে হেস্টিংস থানার পুলিশ। শিশুটির দিদিমা নয়নতারা সর্দার জানান, তাঁর মেয়ে ও নাতনিকে ফেলে রেখে তাঁর জামাই কিছু দিন আগে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তাই মেয়ে ও নাতনিকে খিদিরপুরে বিদ্যাসাগর সেতুর নীচে তাঁদের ঝুপড়িতে নিয়ে এসেছিলেন ওই মহিলা। শিশুটির দিদিমা আরও জানান, শনিবার রাতেও তাঁর নাতনি তাঁদের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল। রাত দেড়টা নাগাদ ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখেন, নাতনি তাঁর পাশে শুয়ে নেই। অনেক রাত পর্যন্ত তিনি স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে নাতনিকে খোঁজেন। ভোরে অন্য ঝুপড়িবাসীরা তাঁদের জানান, রেসকোর্সের বাইরে একটি নালায় তাঁদের নাতনির মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।
পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, আড়াই বছরের মেয়েটিকে যৌন নিগ্রহের পরে শ্বাসরোধ করা হয়। পরে তার গলার নলি কাটা হয়। তার পরেও ওই শিশুটিকে মাটিতে আছাড় মারা হয় বলেও ময়না-তদন্তকারী চিকিত্সকদের অনুমান। কারণ, মেয়েটির পাঁজরের তিনটি হাড় ভাঙা ছিল।
কী করে ধরা পড়ল সুরেশ? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, তদন্তে নেমে হেস্টিংস থানার পুলিশ জানতে পারে, শনিবার রাতে ওই যুবক বিদ্যাসাগর সেতুর নীচে ঝুপড়িবাসী একাধিক মহিলাকে যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করেছিল। মহিলারা সতর্ক থাকায় তার সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ওই মহিলারাই সুরেশের চেহারার বর্ণনা দেন তদন্তকারী অফিসারদের। অন্য একটি সূত্র থেকে পুলিশ খবর পায়, সুরেশ রেসকোর্সে থাকে এবং ঘোড়ার পরিচর্যা করে। এর পরেই রেসকোর্সে সুরেশকে খুঁজতে যায় পুলিশ। সেখানে অবশ্য পাওয়া যায়নি তাকে। রেসকোর্স থেকে ওই যুবকের বিহারের বাড়ির ঠিকানা জানা যায়। পুলিশ জানতে পারে, দুষ্কর্মের পরে রবিবার সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে অভিযুক্ত সুরেশ বিহারে পালিয়েছে। হেস্টিংস থানার একটি দল এ দিন বিকেলে বৈশালীর সইদপুর-গণেশ গ্রামে তার বাড়ি থেকে সুরেশকে গ্রেফতার করেন।
|