ভিটে-মাটিকে ভুলতে পারেনি ‘নিউ কালীদহ’
কেউ বলছেন ৪২। কেউ বা ৩১। এই সংখ্যার তারতম্য ২০০০ সালের বন্যায় গ্রামের কত জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন সেই হিসেব। গ্রামের নাম কালীদহ। মাড়গ্রাম থানার বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের আর একটি অংশের নাম ‘নিউ কালীদহ’। বন্যায় সব কিছু হারিয়ে দেড় কিমি দূরে নিউ কালীদহে বসবাস শুরু করেন ১৫০টি পরিবার। কিন্তু ভোটার তালিকায় কালীদহ গ্রামের নাম থেকে গিয়েছে। তাই ভোটের সময় তাঁরা পুরনো ভিটেতেই এসে ভিড় করেন। ২০০৩, ২০০৬, ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১১ এই পাঁচ বছর ভোটের টানে পুরনো মাটিতে এসেছেন মুক্তার শেখ, জাহির শেখরা। সেই উন্মাদনার খামতি নেই এ বারও। কেউ আলপথ ধরে হেঁটে, কেউ বা যন্ত্রচালিত রিকশায় এখানে এসে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। এই আসা যাওয়া খরচের বেশিরভাগটাই বহন করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
ভোট দিয়ে নতুন ঠিকানায় ফিরছেন কালীদহবাসী। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
নিউ কালীদহ গ্রামের বাসিন্দা মুক্তার শেখ ওই বছর বন্যায় ১৪ বছরের মেয়ে ও প্রৌঢ়া মাকে হারিয়েছেন। বললেন, “স্মৃতি এখনও মন টানে। এলাকায় চাষের জমি আছে। চাষের জন্য ছাড়া কোথাও আত্মীয়স্বজন মারা গেলে যেমন যেতে হয়, তেমনি ভোটের জন্য এখানে আসতে হয়েছে।” আর এক বাসিন্দা জাহির শেখ হারিয়েছেন বাবাকে। মা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে নতুন গ্রামের কাছে জায়গা কিনে বসতি স্থাপন করেছেন। তাঁর কথায়, “কী করব। নিজের ভোটটা যদি অন্য কেউ মেরে দেয়।” ওই বছর বন্যায় সময় ডান পায়ের হাঁটুর উপরে বাড়ির ছাউনির টিন পড়ে কেটে গিয়েছিল। ক্ষতস্থানে গামছা বেঁধে আধপেটা খাবার খেয়ে থেকেছিলেন। সুখেনবাবু বলেন, “গ্রামে এখনও অনেক আত্মীয় আছে। ভোট দিতে এলে তাদের সঙ্গে দেখা হয়।”
২০০০ সালের বন্যার সময়ে বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন নিখিল মার্জিত। তিনিও নিউ কালীদহে বসতি গড়ে তুলেছেন। এ বার পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী। তিনি জানান, কালীদহ ও নিউ কালীদহ মিলে ১১৫৯ ভোটার। তার মধ্যে ৫০০ জন নিউকালীদহে থাকেন। নতুন এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রয়োজন। তা হলেই ওখানেই ভোট দিতে পারতেন তাঁরা। কালীদহ গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য মজিরুল শেখ বলেন, “নতুন গ্রামের বাসিন্দারা যাতে নতুন এলাকায় ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এলাকার বেশিরভাগ মানুষ নিজের জন্মভিটেতে ভোট দিতে চান।” একই কথা শোনা গেল বৃদ্ধা নন্দরানি মণ্ডল ও কৃষ্ণা মার্জিতদের কথায়। তাঁরা বললেন, “পুরনো স্মৃতি নিয়ে বাড়ি ফিরতে ভাল লাগে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.