নির্বাচনের দিন জেলার কোথাও তেমন কোনও বড় অশান্তি হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় ছোটখাটো ঝামেলা ও অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের কথা শোনা গিয়েছে। তবে আগের দিন রাতে অর্থাত্ রবিবার ময়ূরেশ্বরের প্রজাপাড়া গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে দুই সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা হলেন স্থানীয় নামোবেজা গ্রামের অসীম বাগদি (৪৫) ও প্রজাপাড়া গ্রামের জমির শেখ (৪৩)। আরও দু’জন গুরুতর জখম হয়েছেন।
ওই এলাকার তৃণমূল প্রার্থী চাঁদ মহম্মদ বলেন, “গত কাল গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ হয়। সোমবার সকালে গ্রাম লাগোয়া কচু জমিতে দু’জনের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশ এসে প্রজাপাড়া গ্রাম থেকে রাজু শেখ ও খালেক শেখ নামে আরও দুই জখম সিপিএম কর্মীকে উদ্ধার করে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।” |
মহম্মদবাজারের লোহাবাজারে সিপিএম নেতার বাড়িতে ভাঙচুর। ছবি: অনির্বাণ সেন। |
তৃণমূলের ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র বলেন, “নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাস করে জিততে সিপিএমের লোকেরা বোমা বাঁধছিল।” অবশ্য অসীমবাবুর স্ত্রী রূপালিদেবী এবং জমির শেখের স্ত্রী আরোজা বিবি বলেন, “আমরা সিপিএম কর্মী। গত কাল রাতে ফোন পেয়ে ভোটের কাজে ওঁরা বেরিয়ে যান। সকালে শুনি ওঁদের মৃতদেহ পড়ে আছে।” তাঁদের দাবি, “কেউ পরিকল্পিত ভাবে ওঁদের বোমা মেরে খুন করেছে।” সিপিএমের ষাটপলশা লোকাল কমিটির সম্পাদক বিজয় মণ্ডল বলেন, “বোমা বাঁধতে গিয়ে ওই এলকায় দু’জন মারা গিয়েছে বলে শুনেছি। তবে তাঁরা আমাদের কর্মী কি না খোঁজ না নিয়ে বলতে পারছি না। যদি কর্মী হন, তা হলে দলগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবস্থা করা হবে।” পুলিশ জানায়, বোমা বাঁধতে গিয়ে এই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। কী কারণে বোমা বাঁধা হচ্ছিল তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অন্য দিকে, সোমবার ‘ছাপ্পা ভোট’ দিয়ে বুথ থেকে বেরনোর সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর মারে মাথা ফাটলো বছর আটত্রিশের এক তৃণমূলের সমর্থকের। ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর ব্লকের মেটেলা গ্রামে। এর জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের ছোড়া ইটের ঘায়ে হাতে আঘাত পান এক রেল পুলিশের আধিকারিক। ভাঙে পুলিশের গাড়ির পেছনের কাঁচ। কিছুক্ষণ জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে গোহালিয়াড়া পঞ্চায়েত এলাকার ওই বুথে। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা পরিস্থিতি সমলে দিলে শুরু হয় ভোট।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের মাসির হয়ে ভোট দিয়েই সমস্যায় পড়েন স্বপন মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি। বিরোধী দলের অভিযোগ, ছিল তৃণমূলের হয়ে মাসির ভোট দিয়ে দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কানে যেতেই স্বপনের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়। তখনই লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটে স্বপনের। স্বপনের দাবি, “ছাপ্পা ভোট দিতে ওখানে যাইনি। মাসি রামিবালাদেবী চোখে খুব কম দেখেন। তাই তিনি আমাকে তাঁর ভোটটা দিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু এ সব কোনও কথাই না শুনে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয় জওয়ান।” পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। |