রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম দুই তৃণমূল কর্মীকে দেখতে রাতে হাসপাতালে গিয়ে এক চিকিৎসক এবং নার্সের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ উঠেছে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার ১২টা নাগাদ খগেশ্বরবাবু রাজগঞ্জ ব্লক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক এবং নার্সকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন বলে অভিযোগে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও রাজগঞ্জ থানায় জানান। পুলিশ খবর পেয়ে হাসপাতালে যায়।
খগেশ্বরবাবু হুমকি দেওয়ার বিষয় পুরোপুরি অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, “সিপিএমের হামলায় জখম দুই তৃণমূল কর্মীকে চিকিৎসা না করে হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক এবং নার্সদের দ্রুত চিকিৎসা করার জন্য শুধু ‘ধমক’ দিয়েছি মাত্র। ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।”
শনিবার রাতে রাজগঞ্জে মাঝিয়ালি এবং পানাসগুড়ি এলাকায় সিপিএম কর্মীদের হামলায় দলের দুই কর্মী জখম হয়। কালিচরণ রায় এবং বিকাশ রায় নামে দুই জখম তৃণমূল সমর্থককে রাজগঞ্জ ব্লক হাসপাতালে রাত দশটা নাগাদ ভর্তির দু’ঘণ্টা পরেও তাঁদের চিকিৎসা করা হয়নি বলে তৃণমূলের অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১২টা নাগাদ খগেশ্বরবাবু কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসক এবং নার্সকে ডেকে হুমকি দেন। বিধায়কের নামে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “ব্লক হাসপাতাল থেকে রাতেই ফোন করে জানানো হয়, কয়েক জন ব্যক্তি হাসপাতালে গোলমাল করছেন। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সিপিএম জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল আমাদের সমর্থকদের মেরে মিথ্যা অভিনয় করে হাসপাতালে ভর্তি। তবে যেই যাকে মারুক, এক জন বিধায়ক গিয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক এবং নার্সদের হুমকি দেবেন, গালাগাল করবেন, এটা সভ্যতা নয়। রাজ্যের কী পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছে।”
ব্লক হাসপাতালের রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশকে আবেদন করে হাসপাতালে নিরাপত্তা দাবি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অবাঞ্ছিতদের প্রবেশ রুখতে পুলিশি নিরাপত্তা প্রয়োজন। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। |