ভোর বেলা জোরে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক সহকারী সাব ইন্সপেক্টর সহ ৭ জন পুলিশকর্মীর। জখম হয়েছেন এক কনস্টেবল। ভোটের পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কোচবিহারে নিয়ে আসার জন্য মালদহ যাচ্ছিলেন তাঁরা। চ্যাংরাবান্ধা সংলগ্ন ময়নাগুড়ির ব্রহ্মপুর এলাকার সার্ক রোডে একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁদের গাড়িটির। |
দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটিতে আট জন ছিলেন। ঘটনাস্থলেই এএসআই অমিত মঙ্গর (৩০), কনস্টেবল গোপাল দে সরকার (৪২), মদন ছেত্রী (৪৬), ভিলেজ পুলিশ রেজাউল করিম (২৫), সামিউল ইসলাম (২৬) এবং পার্থ সরকারের (২৬) মৃত্যু হয়। গাড়ির চালক রাজেশ হকও (২৪) মারা যান। জখম কনস্টেবল মনিরুল হককে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অমিতবাবু ও মদনবাবু জলপাইগুড়ি রেসকোর্স পাড়ার বাসিন্দা, বাকিরা সকলেই কোচবিহারের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরে ওই ট্রাকের চালক ও খালাসি পালিয়ে যায়।
পঞ্চায়েত ভোটের শেষ দফায় ২৫ জুলাই কোচবিহারে ভোট। সেই জন্য জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের আনতে কোচবিহার থেকে এই দিন পুলিশকর্মীরা পাঁচটি গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন।
কেউ যাচ্ছিলেন বীরভূম, কেউ মুর্শিদাবাদ এবং অমিত মঙ্গরদের গন্তব্য ছিল মালদহ।
ব্রহ্মপুর বাজার এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডান দিকে সরে আসে। সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসা একটি চাল বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে গাড়িটির ধাক্কা লাগে। পুলিশের গাড়িটি দুমড়ে ট্রাকের তলায় ঢুকে যায়। অন্য গাড়িগুলি থেকে পুলিশকর্মীরা নেমে এসে উদ্ধারের কাজ শুরু করেন। হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারাও। কিন্তু গাড়িটি যে ভাবে ট্রাকের নীচে ঢুকে গিয়েছিল, তাতে তা বার করে আনতে ক্রেন নিয়ে আসতে হয়। |
দুর্ঘটনায় মৃত পুলিশকর্মীদের দেহ। |
এদিন দুপুরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে মৃত পুলিশ কর্মীদের জেলা পুলিশ লাইনে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
সকালের মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকাহত হয়ে পড়ে পুলিশমহল। গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে। নির্বাচনী বিধি নিষেধ উঠে গেলে আমি মৃতদের বাড়ি যাব।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পুলিশের এই গাড়িটির গতি বেশি থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। জোর গতিতে ‘ওভারটেক’ করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা হয়েছে কী না, তা-ও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। মেখলিগঞ্জের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দ্রুত গতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে পুলিশের গাড়িটি ভুল দিকে চলে যায় এবং দুর্ঘটনা ঘটে।”
|