বোমা ফেটে মৃত্যু হয়েছে দুই কংগ্রেস কর্মীর। রবিবার ভোরে বেলডাঙার কাপাসডাঙা গ্রামের নুরবক্স শেখ (৪০) ও হায়াৎ আলি শেখ (৩৫) বোমার ঘায়ে মারা গিয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য, দু’জনই বোমা বাঁধতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। মৃতেরা এলাকার পরিচিত সমাজবিরোধী। গত বিধানসভা ভোটে নিহত নুর বক্সের বাড়ি থেকে বোমা মেলে। যদিও কংগ্রেস ও মৃতের পরিবারের দাবি, তৃণমূল ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশকে ঘিরে জনতা বিক্ষোভ দেখায়। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায়। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেলও। ক্ষুব্ধ জনতা পাশের গ্রাম বেগুনবাড়িতে গাছের গুঁড়ি ফেলে পুলিশের গাড়ি আটকায়। এলাকার দুই কংগ্রেস বিধায়ক পৌঁছলে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। দীর্ঘক্ষণ জনতা-পুলিশ বচসার পর শেষমেশ বিধায়কের হস্তক্ষেপে ওঠে অবরোধ। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “বোমা বানাতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই দু’জনের। তাদের পরিবারের লোক পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছে। তবে ওই ঘটনায় ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।” রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, “দিনকয়েক ধরেই সিপিএম ও তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। এ দিন আমাদের ওই দুই কর্মী একটি দোকানে বসেছিল। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।”
তৃণমূল ও সিপিএম এই ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে বিরোধীরা এই ধরনের ঘটনা সাজাচ্ছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্গ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তাঁর দল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
মৃত নুর বক্স শেখের স্ত্রী মানোয়ারা খাতুন বলেন, “ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশের একটি মাচায় বসেছিল আমার স্বামী। হঠাৎ দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়ে তাঁকে খুন করল।” অন্যদিকে মৃত হায়াৎ আলি শেখের স্ত্রী হাসিনা বিবি বলেন, “তখনও বিছানা ছাড়িনি। হঠাৎ বোমার আওয়াজ পেলাম। দেখি পাশে স্বামী নেই। পরে জানতে পারলাম বোমার আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।” |