দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় মৃত্যু হয়েছে এক কংগ্রেস কর্মীর। নিহত ওই কংগ্রেস কর্মী হাসানুর জামান (২৬) ভরতপুরের সাহাবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন এক জন। মানোয়ার হোসেন নামে আহত ওই যুবককে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল ও সিপিএমের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমাই তাদের সমর্থকের মৃত্যুর কারণ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কংগ্রেস কর্মী গীতগ্রামে মামার বাড়িতে থাকতেন। তাঁর মামা নজরুল হুদা কংগ্রেসের টিকিটে ভরতপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে লড়ছেন। রবিবার সাতসকালে ওই যুবক তাঁর এক সঙ্গীকে নিয়ে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে বাজারে গিয়েছিলেন। তখন গ্রামের ক্যানালের ওপার থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁদের উপর বোমা ছোড়ে। বোমার ঘায়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান হাসানুর জামান। গুরুতর জখম হয়েছেন নিহতের সঙ্গী। নিহত হাসানুর জামান এলাকায় নির্বিবাদী ছেলে হিসেবে পরিচিত। মামা প্রার্থী হওয়ায় ভোটে নিয়মিত প্রচারও করছিলেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, শনিবার রাত থেকে গীতগ্রাম সংলগ্ন বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার চরকপাড়া-মাঝিনা এলাকায় তৃণমূল ও সিপিএমের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা তাদের সমর্থকদের উপর হামলা করে। পুলিশকে জানানো হলেও তেমন গা করেনি। এ দিন সকালে পড়শি জেলার ওই দুষ্কৃতীরা তাদের সমর্থককে বোমা ছুড়ে খুন করেছে। ভরতপুর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের সক্রিয় কর্মীকে খুন করেছে। ওরা এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।” যথারীতি তৃণমূল ও সিপিএম অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ভরতপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, “হিংসার রাজনীতিতে আমাদের বিশ্বাস নেই। কংগ্রেসের অর্ন্তদ্বন্দ্বের ফলে ওই যুবক খুন হয়েছেন।” অন্য দিকে সিপিএমের ভরতপুর-সালার জোনাল কমিটির সম্পাদক কার্তিক মণ্ডলের বক্তব্য, “ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নন। কংগ্রেস ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বের ফলেই ওই যুবক খুন হয়েছেন।”
ওই যুবকের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই সকাল সওয়া আটটা নাগাদ ভরতপুর থানার সামনে কংগ্রেস কর্মীরা সালার-কান্দি রাজ্য সড়ক অবরোধ করে। ভোটকর্মীদের গন্তব্যে যেতেও বাধা দেয় অবরোধকারীরা। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দিলে ঘণ্টাখানেক পর উঠে যায় অবরোধ। কান্দি মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হার নিশ্চিত জেনে সিপিএম ও তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ উল্টে গুন্ডাদের মদত দেওয়ায় আমাদের কর্মী খুন হল।” এ দিন দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর ঘটনাস্থলে যান। পুলিশি গাফিলতি সম্পর্কে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে খুন সম্পর্কে তাঁর জবাব, “নিরীহ এক যুবকের বোমার ঘায়ে মৃত্যু হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তদন্ত চলছে।” |