|
|
|
|
তৃণমূলের সভা মেদিনীপুরে |
কর্মীদের সংযত থাকার নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দু’দিন আগেই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, “যদি কোনও নির্দল প্রার্থী কারও বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়, তার বাড়িটা ভেঙে দিন, জ্বালিয়ে দিন। কোনও নির্দল প্রার্থী যদি কোনও হুমকি দেয়, তার বাড়িতে চড়াও হোন।” তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এই জেলায় ভোট মিটে গিয়েছে। কিন্তু থামেনি হিংসার ঘটনা। আগামী ২৯ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা। সেই সময় ফের অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের সতর্ক করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। শনিবার এক সভায় দীনেনবাবু বলেন, “নির্বাচনে জিতলে আনন্দ করবেন। কিন্তু দেখবেন, আপনার আনন্দ যেন অন্যের দুঃখের কারণ না হয়। কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। কোনও ভাবে প্ররোচিত হবে না।” দীনেনবাবুর পরামর্শ, “এর ঘরে আগুন দিলাম, ওর ঘরে আগুন দিলাম, এ সব চলবে না। এ সব কাজ তৃণমূল করে না। সিপিএম এমন কাজ করেছে বলেই আজ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন। কোথাও যদি এমন ঘটনা ঘটে, তার দায় সংশ্লিষ্ট বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটিকে নিতে হবে।” কোথাও সমস্যা হলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে ব্লক ও জেলা স্তরের নেতাদের জানানোর পরামর্শও দিয়েছেন দীনেনবাবু।
রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে যখন হিংসার অভিযোগ উঠছে, উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা, সেই পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় তৃণমূল সভাপতির এই বক্তব্য তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, দলীয় কর্মীদের আসলে কড়া বার্তা দিয়েছেন দীনেনবাবু। বুঝিয়েছেন, ইচ্ছে করে গোলমালে জড়ালে দল পাশে থাকবে না। শাসক দলের নেতা-কর্মীরা সংযত থাকলে, অশান্তির ঘটনা কমে। তাই এই আগাম সতর্কতা। দীনেনবাবুর সুরেই তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতির বক্তব্য, “জেলার সর্বত্র শান্তি ফিরেছে। তা রক্ষা করতে হবে। মানুষ আর অশান্তির দিন দেখতে চান না।”
অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদ প্রার্থীদের নিয়ে শনিবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে এক সভা করে তৃণমূল। ভোটগণনার সময় এজেন্টের কী করণীয়, তা জানাতেই এই আয়োজন। তৃণমূলের আশঙ্কা, গণনার দায়িত্বে থাকা ভোটকর্মীদের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন কমিটির লোক থাকবেন। অসতর্ক হলেই কারচুপি হতে পারে! তাই সব নিয়ম-কানুন জেনে সতর্ক থাকা জরুরি। এ দিন সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউনাইটেড স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের রাজ্য কোর কমিটির চেয়ারম্যান মৃগেনবাবু বলেন, “একটা লড়াই শেষ হয়েছে (ভোট)। এ বার আরও একটা লড়াই (গণনা)! এ লড়াইটা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সঙ্গে আমাদের দলের এজেন্টদের!” শনিবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ প্রমুখ। পশ্চিম মেদিনীপুর একদা ছিল ‘লালদুর্গ’। এ বার সম্ভবত পাশা পাল্টাতে চলেছে। ভোটের আগেই বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। বাকি দুই স্তরের লড়াইয়েও তারাই এগিয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্বাবু বলেন, “পঞ্চায়েতে আমরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব।” সিপিএমের ভোট-পরবর্তী পর্যালোচনাতেও বিপর্যয়ের ইঙ্গিত উঠে এসেছে। নজরে এখন শুধু জেলা পরিষদ। সেখানে কী হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|