এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা ছিল শ্মশানঘাটে একটি বৈদ্যুতিক চুল্লির। অতীতে চেষ্টা করা হলেও তা শুরু করা যায়নি। দেরিতে হলেও কাটোয়া শ্মশানঘাটে আগামী মাসে চালু হতে চলেছে এই বৈদ্যুতিক চুল্লি। কাটোয়া পুরসভা সূত্রে খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে অগস্ট মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।
কাটোয়া শহরে এখনও শ্মশানঘাটে কাঠ ও কয়লার মাধ্যমে মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা রয়ে গিয়েছে।
কাটোয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে এলাকা দূষিত হচ্ছে। সে জন্যই তাঁরা বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু করার ব্যাপারে অনেক দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁরা জানান, ভাগীরথী তীরবর্তী বেশ কিছু শহরে বৈদ্যুতিক চুল্লির ব্যবস্থা রয়েছে। কংগ্রেস পরিচালিত কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের গুরুত্ব বুঝে তৎকালীন কাটোয়ার পুরপ্রধান ও বর্তমান বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দিল্লি গিয়ে গঙ্গা অ্যাকশন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) মাধ্যমে বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজ অন্তর্ভুক্ত করান।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরু হতে দেরি হয়। প্রকল্পের কাজটি করছে রাজ্য পুরসভা সমূহের বাস্তুকার অধিকর্তা (এমইডি) দফতরের বর্ধমান বিভাগ। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগেই বৈদ্যুতিক চুল্লির যন্ত্রপাতি বসানো, দূষণ রোধের প্রাথমিক কাজ, ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দেরি হওয়ার জন্য পুরসভাকে বৈদ্যুতিক চুল্লি হস্তান্তরের কাজটি পিছিয়ে যায়।
এমইডি (বর্ধমান বিভাগ) সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে বৈদ্যুতিক সংযোগ পাওয়ার পর বৈদ্যুতিক চুল্লি ভবনের ভিতর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ‘আর্থিং’ করার পর যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, এ মাসেই তা কেটে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে এমইডি (বর্ধমান)-এর কর্তাদের তরফে। তাঁরা জানান, কাটোয়া শ্মশানঘাটে সৌন্দর্যায়নের সামান্য কাজ বাকি। এমইডি (বর্ধমান বিভাগ) জানায়, কাটোয়া শ্মশানঘাটে বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণে খরচ দাঁড়াচ্ছে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা। বারবার টাকা পেতে দেরি হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তাঁরা কাজ শেষ করতে পেরেছেন, এমনই দাবি করেছেন এমইডি (বর্ধমান) দফতর।
কাটোয়া পুর কর্তপক্ষ জানিয়েছে, অগস্টে বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হলেও কাঠ বা কয়লার চুল্লিও আপাতত রাখা হবে। এই চুল্লি চালু হলে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যাবে এবং মৃতদেহ সৎকারের সময় কম লাগবে, দাবি পুর কর্তপক্ষের। |