বিধায়ক সাসপেন্ড
বিহার বিজেপিতে বিদ্রোহ, ভাঙন এড়াতে তৎপর নেতৃত্ব
জেডিইউ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই বিদ্রোহ বিহার বিজেপিতে।
রাজ্যের অন্যতম শীর্ষ নেতা সুশীল মোদীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় ইতিমধ্যেই এক বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যদিও দলীয় সূত্রের খবর, ওই বিধায়ক ছাড়া আরও অন্তত সাত জন বিধায়ক সুশীল মোদীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে রয়েছেন। বিজেপি নেতৃত্ব ওই ভাঙনের পিছনে জেডিইউ নেতৃত্বকে দায়ী করলেও দলের একাংশ মানছেন, বিহারে দলের একটি অংশই সুশীল মোদীকে নিয়ে অসন্তুষ্ট। দলের বর্ষীয়ান নেতা, ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সিপি ঠাকুর বলেছেন, “প্রথমেই সাসপেন্ড না করে আগে ওই বিধায়কের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল।”
সুশীল মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় জন্য দ্বারভাঙার যে বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তিনি অমরনাথ গামি। অমরনাথ বলেছেন, “সুশীল মোদী ক্ষমতালোভী। তিনি চান না দলের অন্য কেউ উঠে আসুক। তাঁর জন্য দল বাড়ছে না” শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে অমরনাথকে সাসপেন্ড করা হলেও বিহারে এই মুহূর্তে নতুন করে দলে ভাঙন চাইছেন না সঙ্ঘ ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আর এক বছরও বাকি নেই। কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলে তুরুপের তাস হতে পারে বিহার ও উত্তরপ্রদেশ। ফলে বিহারে দলকে ভাঙতে দেওয়া যাবে না।
নীতীশ কুমার সুশীল মোদী
বিরোধী শিবির সুশীলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার যে সময় বেছে নিয়েছে, তা-ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। দু’দিন আগে লোকসভা নির্বাচন সংক্রান্ত একাধিক কমিটির তালিকা গড়েছে বিজেপি। তাতে সুশীল মোদী থাকলেও স্থান পাননি ওই রাজ্যের নরেন্দ্র মোদী-ঘনিষ্ঠ অনেক নেতা। সুতরাং আগামী দিনে টিকিট বিতরণ থেকে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ সব ক্ষেত্রেই নরেন্দ্র মোদী-সমর্থকদের ভূমিকা গৌণ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সুশীলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়ার কৌশলও যে হতে পারে, সে বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সঙ্ঘ তথা বিজেপি নেতৃত্ব এখন উভয় গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকের কথা ভাবছে। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহ বিদেশ থেকে ফিরে এলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
চলতি বিদ্রোহের পিছনে নীতীশ কুমারের হাত রয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ তুললেও জেডিইউয়ের রাজ্যসভা সাংসদ শিবানন্দ তিওয়ারি তা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিজেপির এই ভাঙনে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। বিহার বিজেপির একটি বড় অংশ নীতীশ-সরকারের প্রতি সহানভূতিশীল। এ ঘটনায় তারই প্রতিফলন ঘটছে।” জেডিইউয়ের বক্তব্য, বিজেপির অনেকে নরেন্দ্র মোদীকে দলের মুখ হিসেবে তুলে ধরা পছন্দ করছে না। তাঁরাই বিদ্রোহ করেছেন।
তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, নরেন্দ্র মোদী নন, সমস্যার মূলে রয়েছে বিহার বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সরকার ছেড়ে আসার পর এটা আরও বেড়ে গিয়েছে। ভূমিহার নেতা সি পি ঠাকুর, কায়স্থ নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ, রাজনাথ সিংহ-ঘনিষ্ঠ রাজপুত নেতা রাজীবপ্রতাপ রুডির মধ্যে ক্ষমতার লড়াই চলছে। তার মধ্যে একদা নীতীশ-ঘনিষ্ঠ সুশীল মোদী ফের বিহার বিজেপির মুখ হয়ে উঠেছেন। এটা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না অন্য বিজেপি নেতারা। দলে নরেন্দ্র মোদী-ঘনিষ্ঠ নেতারা আড়ালে বলছেন, জেডিইউয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে এখন নীতীশ-বিরোধিতায় মুখর হয়েছেন সুশীল মোদী। অথচ গত সাত বছর ধরে নীতীশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছেন তিনি। এমনকী আগে দূরত্ব রাখলেও এখন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন সুশীল। তাঁদের কথায়, মানুষ তাঁর এই ভোলবদল নিয়ে হাসাহাসি করছেন। এতে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.