তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে গাঁটছাড়া ও সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে গাঁটছাড়া আছে। এ কথা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রায়ই বলে থাকে। কিন্তু কোনও দলই এই অভিযোগ মানতে চায় না। কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলছে।
ময়ূরেশ্বর এলাকায় কোথাও কোথাও বিজেপির প্রভাব রয়েছে। সেই ময়ূরেশ্বরে ‘তৃণমূল-বিজেপি জোটে’র পোস্টার পড়েছে। আবার সাঁইথিয়ায় ‘কংগ্রেস-সিপিএম জোটে’র দেওয়াল লিখন হয়েছে।
যমুনা পাল।
নিজস্ব চিত্র।
|
ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের ঝিকড্ডা পঞ্চায়েত। গত বার আসন ছিল ১৫। দলগত অবস্থান ছিল বিজেপি ১, কংগ্রেস ৩, তৃণমূল ৪, সিপিএম ৬, সিপিআই ১। এ বার আসন বেড়ে হয়েছে ১৬। এই ১৬ আসনের রাউতড়া সংসদের মীরপুর গ্রামের বাসিন্দা, বধূ যমুনা পাল এ বার ১২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী। মীরপুর-সহ তাঁর নির্বাচনী এলাকার দেওয়ালে, গাছ, ল্যাম্প পোস্টে তাঁকে জেতানোর উদ্দেশ্যে লেখা আছে, আসন্ন ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল-বিজেপি জোট প্রার্থী যমুনা পালকে এই চিহ্নে ভোট দিন। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকার বলেন, “ঝিকড্ডা পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতে তৃণমূল ও ৪টিতে জোট বেঁধে লড়ছি। তবে একটিতে আবার তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনের মধ্যে ২টিতে তৃণমূল ও ১টিতে বিজেপি।” সরাসরি জোটের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে তৃণমূলের ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক সভাপতি অরিজিৎ রায় বলেন, “সিপিএমকে ঠেকাতে স্থানীয় স্তরে জোট করেছে।” বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল বলেন, “আমরা শুনেছি ওখানে জোট করেছে। আমাদের দলের যাঁরা জোট করেছে ভোটের পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো বার বার বলে এসেছি, তৃণমূল-বিজেপির গাঁটছাড়ার কথা। এখানে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অন্যত্র লুকিয়ে চলছে।” অন্য দিকে, সাঁইথিয়ার হরিসড়া পঞ্চায়েতের মোনাই গ্রামের রাস্তার পাশে একটি বাড়ির দেওয়ালে চোখ যেতেই আটকে গেল। সেখানে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী, নীচে কংগ্রেসের হাত চিহ্ন। হাত চিহ্নের পাশে লেখা এই চিহ্নে ভোট দিন। পাশেই কাস্তে হাতুড়ির চিহ্ন। তার পাশে লেখা এই চিহ্নে ছাপ দিন। তবে কোনও প্রার্থীর নাম লেখা নেই। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক জুরান বাগদির দাবি, “বিরোধীদের কেউ বা কারা সিপিএমের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এমনটা করেছে।” কংগ্রেসের সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি প্রদীপ সরকার বলেন, “ওখানে তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই। কাজেই কংগ্রেসকে সিপিএমের সাহায্যের কোনও প্রশ্নই নেই। এটা তৃণমূলের কেউ করে থাকতে পারে।” যদিও তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি সাধন মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওদের মধ্যে গাঁটছাড়ার কথা সকলেই জানে। এখন ধরা পড়ে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।” |