কবে আসবে রাজবাড়ির নতুন অতিথি, সরগরম গোটা ব্রিটেন
ব্রিটেনের সিংহাসনের তৃতীয় উত্তরসূরি যদি এ সপ্তাহেও পৃথিবীর আলো না দেখে, তা হলে রানির সঙ্গে অক্টোবরের আগে দেখাই হবে না তার। ২৬ জুলাই গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে স্কটল্যান্ডের বালমোরালের উদ্দেশে রওনা দেবেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। নতুন অতিথির আবির্ভাব যদি আরও পিছিয়ে যায়, রানির রুটিনে কিন্তু কোনও কাটছাঁট হবে না। ছুটি শেষ হলে তবেই বাবার ঠাকুমা মুখ দেখবেন উইলিয়াম-কেটের সন্তানের। রানির কী পছন্দ? মেয়ে না ছেলে? দশ বছরের ছোট্ট মেয়ে ফে বেটস প্রশ্ন করেছিল তাঁকে। “ছেলে বা মেয়ে যা-ই হোক, ও তাড়াতাড়ি পৃথিবীতে এলেই আমি খুশি। ছুটিতে চলে যাচ্ছি যে” জবাব ব্যস্ত সম্রাজ্ঞীর। রাজশিশুর জন্য অপেক্ষার প্রহর তাই ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে। কথা ছিল জুলাইয়ের মাঝামাঝি। কিন্তু গোটা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমকে এখনও সুখবর দেননি রাজদম্পতি। সব চেয়ে আলোচনা হয়েছিল ১৩ জুলাই নিয়ে। বাকিংহাম প্যালেসের তরফেই জানানো হয়েছিল তারিখটা। কিন্তু সে তারিখ এল, চলেও গেল। মেয়ে হবে না ছেলে, তার সম্ভাব্য নাম, ওজন আর সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে ব্রিটেনে জুয়াড়িদের বাজার গরম।
কেটের সঙ্গে উইলিয়াম। —ফাইল চিত্র।
নতুন অতিথি আসার আগে তাই এই উন্মাদনাকে কাজে লাগাতে চাইছে সংবাদমাধ্যম। যেখানে সিংহাসনের তৃতীয় দাবিদার ভূমিষ্ঠ হবে, প্যাডিংটনে সেই সেন্ট মেরিজ হাসপাতালের বাইরে ১ জুলাই ফোল্ডিং চেয়ার, ব্রিটেনের পতাকা আর খবরের কাগজ নিয়ে বসে পড়েছিলেন বয়স্ক এক ব্যক্তি। তার পর সেখানে একে একে জড়ো হন বিশ্বের নানা প্রান্তের সাংবাদিক। ভিড় জমায় টিভি ক্যামেরা, পর্যটক আর সাধারণ উৎসাহী জনতাও। ঘণ্টায় ঘণ্টায় ‘আপডেট’ দিতে ব্যস্ত টিভি সাংবাদিকরা। কিন্তু কুড়ি দিন পেরোতে চললেও তাদের দৌড়োদৌড়ি থামেনি। উল্টে গোটা রাস্তাটাকে এখন ডাকা হচ্ছে ‘ক্রেজি স্ট্রিট’ নামে। লন্ডনে তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এক সময় যেখানে ছিলেন এবং সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, সেই ফ্রন্টলাইন ক্লাবে এখন চিনা, অস্ট্রেলীয়, কানাডীয়, মার্কিন সাংবাদিকদের ভিড়।
সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি নতুন অতিথিকে অভ্যর্থনা জানাতে তৈরি সেন্ট মেরিজ হাসপাতালও। গত কয়েক দিন ধরেই চূড়ান্ত সতর্কতা সেখানে। কেটের সন্তান জন্ম নেবে যাঁর হাতে সেই স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ মার্কাস সেটশেলকে দ্রুত নিয়ে আসার জন্য তৈরি আছে কনভয়। এই মার্কাসকে নিয়েও লাফালাফি করছে সংবাদমাধ্যম। ছাপা হচ্ছে তাঁর ছবি।
হুজুগ থেকে নিস্তার নেই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনেরও। গত বৃহস্পতিবার লর্ডসে খেলা দেখতে যান তিনি। ভিআইপি বক্সে তাঁর জন্য এল একটি বিশেষ নোট। তখনই চার দিকে ফিসফাস: নিশ্চয়ই রাজশিশু জন্মের কোনও খবর! কিন্তু না, সে দিনও হতাশ সবাই। কনজারভেটিভ মন্ত্রী কেন ক্লার্ক স্কোর জানতে চেয়েছিলেন ক্যামেরনের কাছে।
নতুন অতিথি ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবর এলেই নায়াগ্রা জলপ্রপাতে দেখা যাবে আলোর মেলা। মেয়ে হলে গোলাপি আলো আর ছেলে হলে নীল আলো। আর কেট-উইলিয়ামের প্রথম সন্তানকে স্বাগত জানাতে টাওয়ার অফ লন্ডন থেকে শোনা যাবে ৬২টি তোপধ্বনি। টেমসে থাকবে আলোর রোশনাই। লাল-সাদা-নীল আলোয় ঝলমল করবে লন্ডন আই।
এই হইচইয়ে একেবারেই অবিচলিত ডাচেস অফ কেমব্রিজ কেট। গত সপ্তাহে লন্ডন থেকে ৫৫ মাইল দূরে বাকিংহামশায়ারের বাকলবেরিতে মায়ের বাড়িতে ছিলেন তিনি। পরিবার আর উইলিয়াম ছিলেন তাঁর পাশে। গত শুক্রবার সেখান থেকে তাঁরা যখন লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেসে রওনা দিচ্ছেন, তখন আর এক প্রস্ত গুঞ্জন। কেনসিংটন প্যালেস-এর অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন তাঁরা। হাসপাতাল থেকে যেটির দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিট। তাই কেট-উইলিয়ামদের ফেরার সময় গাড়ির কনভয় দেখে রটে যায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এল বুঝি! কিন্তু ফের নিরাশ হলেন সাংবাদিকরা। তবে কিছু কিছু ট্যাবলয়েড খবর করে, কেটের মা ক্যাথরিন মিডলটন নাকি তাঁর এক বন্ধুকে জানিয়েছেন, শিশুটি লিও হতে পারে। লিওদের জন্মদিন শুরু হয় ২৩ জুলাই থেকে। সে ক্ষেত্রে এই সপ্তাহে রাজশিশুর আগমনের সম্ভাবনা আরও একটু বাড়ল বলে মনে করছে সংবাদমাধ্যম।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.