জেলার চারটি বুথে শতকরা ১০০ ভাগ ভোট পড়েছে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য পৌঁছেছিল। সেই তথ্য যাচাই করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশও দিয়েছিল কমিশন। তদন্তে নেমে এ বার সেই তথ্য সঠিক নয় বলে জানাল জেলা প্রশাসন। বর্ধমানের জেলাশাসক ও জেলা নির্বাচন আধিকারিক ওঙ্কার সিংহ মিনা রবিবার জানান, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের ৫৯ ও ২০ নম্বর, কালনা ২ ব্লকের ১১৪ ও রায়না ১ ব্লকের ১৩০ নম্বর বুথে শতকরা ১০০ ভাগ ভোট পড়েছে বলে যে তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়েছিল, তার পিছনে রয়েছে বুথগুলির প্রিসাইডিং অফিসারদের দেওয়া ভুল তথ্য। এই বুথগুলিতে শতকরা ৯০ ভাগ ভোট পড়েছিল। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসারেরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে যে এসএমএস পাঠিয়ে ছিলেন, তাতে ওই বুথগুলিতে ১০০ ভাগ ভোট পড়েছে বলে জানানো হয়েছিল।
জেলাশাসক আরও বলেন, “ওই চারটি বুথে ব্যবহৃত ব্যালট পেপারের তহবিল মিলিয়ে দেখেছি যে প্রিসাইডিং অফিসারেরা এসএমএসে নির্বাচন কমিশনকে যে তথ্য পাঠিয়েছিলেন, তা ঠিক নয়। ওঁরা যে সংখ্যক ভোট পড়ার কথা জানিয়েছিলেন, তত ব্যালট পেপার ইস্যুই করা হয়নি। এই বুথগুলিতে কম বেশি ৯০ ভাগ বলে কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ ছাড়া পুনর্নির্বাচনের সময়ে জেলার ২৩টি বুথের যেগুলিতে ছোট বড় গোলামালের ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলি সম্পর্কেও সংশ্লিষ্ট থানায় এফআইআর করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই কিছু লোককে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “২৩টি ঘটনায় মোট ১৯ জন অভিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গলসিতে ১, বর্ধমানে ৫, মন্তেশ্বরে ১, মঙ্গলকোটে ২, কাটোয়াতে ২ ও কেতুগ্রামে ৫ জনকে ধরা হয়েছে।”
জেলা পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় বেশি ভোট পড়েছে। দুর্গাপুর-আসানসোলের ব্লকগুলিতে প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যান হলো, অন্ডালে শতকরা ৭৬ ভাগ, বারাবানিতে ৮২ শতাংশ, দুর্গাপুর-ফরিদপুরে ৭৯, জামুরিয়াতে ৭৩, পাণ্ডবেশ্বরে ৭৪, রানিগঞ্জে ৭৮ ও সালানপুরে ৭৯ শতাংশ। এর মধ্যে জামুরিয়ায় পড়া ভোটের অনুপাত জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থাৎ একমাত্র বারাবনি ছাড়া শিল্পাঞ্চলের কোথাও প্রদত্ত ভোটের হার ৮০ ভাগ ছাড়ায়নি। কিন্তু জেলার গ্রামীণ এলাকায় কালনা ২ ব্লকে সর্বাধিক ৮৯ ভাগ ভোট পড়েছে। একমাত্র কেতুগ্রামে শতকরা ৭৪ ভাগ ছাড়া জেলার গ্রামীণ এলাকার সর্বত্র শতকরা ৮০ ভাগের উপরে ভোট পড়েছে। আউশগ্রাম ২ ব্লকে ৮৬, ভাতারে ৮৪, কালনা ১ ব্লকে ৮৭, কাঁকসায় ৮৫, কাটোয়া ১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ৮৫ ও ৮৭, কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ৮৬, খণ্ডঘোষ ও মেমারি ২ ব্লকে শতকরা ৮৭ ভাগ ভোট পড়েছে। |