উখড়া পঞ্চায়েত
জোট পাল্টে ফের ক্ষমতা দখলের আশায় নকশাল
ঙ্গী পাল্টেছে বারবার। গত দেড় দশকে অন্ডালের উখড়া পঞ্চায়েতে পরপর দু’বার নির্দিষ্ট কোনও পক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোটে লড়েনি নকশালেরা। এ বার তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে তারা আসন সমঝোতা করেছিল কংগ্রেস এবং সিপিএমের সঙ্গে। নির্বিঘ্নে ভোট মেটার পরে পঞ্চায়েতে ফের ক্ষমতায় ফেরার আশায় সিপিআই (এমএল)।
১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত উখড়া পঞ্চায়েত ছিল কংগ্রেসের দখলে। ১৯৯৮ সালে সিপিআই (এমএল) কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় আসে। ২০০৩ সালে তারা আবার জোট বাঁধে সিপিএমের সঙ্গে। সে বারই প্রথম বামেরা পঞ্চায়েত দখল করে। তবে নকশালেরা আসন পেয়েছিল খুব কম। তাই ২০০৬ সালে নকশাল জোট ভেঙে বেরিয়ে গেলেও পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলেই থাকে। ২০০৮-এ এই নকশালই আবার কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়ে। সে বারও বামফ্রন্ট ক্ষমতা দখল করে।
এ বার তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে কংগ্রেস, সিপিএম এবং নকশালের মধ্যে আসন সমঝোতা হয় উখড়ায়। ২২টি আসনের মধ্যে ৯টিতে তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হয়েছে। ওই ন’টির মধ্যে নকশালেরা ৪টি, সিপিএম ও কংগ্রেস দু’টি করে এবং একটিতে সিপিএম ও কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল লড়াই করেছে। বাকি ১৩টি আসনে সিপিএম সব ক’টিতে এবং কংগ্রেস ১১টিতে প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনের একটিতে সিপিএম প্রার্থী না দেওয়ায় সেখানে লড়াই হয়েছে কংগ্রেস, নকশাল এবং তৃণমূলের। বাকি দু’টি আসনে নকশাল প্রার্থী দেয়নি।
সিপিএমের উখড়া অঞ্চল কমিটির সম্পাদক সুশান্ত মুখোপাধ্যায় নকশালদের সঙ্গে জোটের কথা মানলেও কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার কথা অস্বীকার করেন। তবে তাঁর মন্তব্য, “অদূর ভবিষ্যতে গণতন্ত্রপ্রেমী সমস্ত দলই তৃণমূলের বিরুদ্ধে এক সঙ্গে লড়বে।” কংগ্রেস নেতা তথা উখড়ার প্রাক্তন প্রধান শোভনলাল সিংহহান্ডা আবার জানান, তাঁরা পঞ্চায়েত স্তরে নকশালদের সঙ্গে জোট করেছেন। দু’টি আসনে সিপিএম এবং একটি আসনে নির্দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া যায়নি। শোভনবাবু বলেন, “১৯৯৮ সালে নকশালেরা আমাদের সঙ্গে ছিল। তাই এখন আবার তারা সঙ্গে থাকায় আশ্চর্যের কিছু নেই।”
সিপিআই(এমএল)-এর উখড়া লোকাল সম্পাদক তথা অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সদস্য কালিয়া বাউড়ির বক্তব্য, “আমরা যখন যাকে শ্রেণিশত্রু মনে করেছি, তার বিরুদ্ধেই লড়াই করেছি। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে নানা ঘটনায় বুঝতে পেরেছি তৃণমূলের আসল রূপ। তাই এ বার এখানে বড় শত্রুকে আটকাতে ছোট শত্রুদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছি।”
২০০৮-এ মোট ১৯টি আসনের মধ্যে ১২টিতে জিতে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছিল বামফ্রন্ট। সে বার কংগ্রেস পাঁচটি এবং নকশাল দু’টি আসনে জয়ী হয়। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের এক বছর পরেই প্রধান তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ তোলেন পঞ্চায়েতের অন্য সিপিএম সদস্যেরা। বিডিও-র কাছে তাঁরা আস্থা ভোট চেয়ে আবেদনও করেন। তবে আস্থা ভোটের দিন তাঁদের কেউই পঞ্চায়েতে যাননি। সিপিএম পরে অভিযোগ তোলে, তাঁদের দুই সদস্যকে তৃণমূলের লোকজন অপহরণ করেছিল। দশ জন ছাড়া কোরাম গঠন করা যাবে না বলেই তাঁদের কোনও সদস্য আস্থা ভোটে যোগ দেননি। পরে প্রধানকে দল থেকে বহিষ্কার করে সিপিএম। এ ছাড়া কংগ্রেসের তিন জন এবং সিপিআইয়ের এক জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন।
এ বার ভোটের পরে সিপিএম, কংগ্রেস ও নকশাল, তিন দলের নেতাদেরই দাবি, ভোট অনেকটাই শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। ক্ষমতায় আসার আশাই করছেন, জানান তাঁরা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের যদিও সাফ বক্তব্য, “নীতিহীন হয়ে সুবিধাবাদীরা জোট করেছে। মানুষ যে ওদের প্রত্যাখ্যান করেছেন, ভোটের ফলেই বোঝা যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.