ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ায় কেশপুরের একটি স্বজলধারা প্রকল্পে জল সরবরাহ আপাতত বন্ধ করে দিল প্রশাসন। আশঙ্কা, পাইপের বেশ কিছু জায়গায় ফুটো থাকায় দূষিত জল মিশছিল। সেই জল খাওয়ার ফলেই স্থানীয়রা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, পাইপ মেরামত করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে প্রকল্পটি ফের চালু করে দেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে কেশপুরের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫৫ জন। এঁদের মধ্যে এখনও প্রায় ২০ জন কেশপুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “কেশপুরে বেশ কয়েকজন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে, উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। এলাকায় মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।” স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আক্রান্তদের অনেকেই চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
গত মে-জুন মাসে মেদিনীপুর সদর-সহ জেলার কিছু এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। স্থানীয়রা আক্রান্ত হন। সেই সময় জেলায় অতিবৃষ্টি হয়েছিল। আর তার কিছু দিন পর থেকে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। দূষিত জল থেকেই এমন পরিস্থিতি বলে উঠে আসে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে। পরে জলের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানোও হয়। সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ করা হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, কেশপুরে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে দিন তিনেক আগে। ঝেঁতলা, সরিষাখোলা এবং ধলহারাএই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। শুরুতে সকলকেই কেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইতিমধ্যে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধিদল। দলে ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছি। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কিছু পদক্ষেপও করা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কেশপুরের ওই এলাকায় একটি স্বজলধারা প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পটি আগেই চালু হয়েছে। প্রকল্পের জন্য যে পাইপ লাইন রয়েছে, সেই পাইপের কিছু জায়গায় ফুটো রয়েছে। ফলে বাইরের নোংরা-আবর্জনা ওই পাইপের মধ্যে ঢুকে জলে গিয়ে মিশে। এই ভাবে দূষিত জলের মাধ্যমে ডায়েরিয়া ছড়িয়েছে আশঙ্কায় স্বজলধারা প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দারা এখন অন্য নলকূপের জল ব্যবহার করছেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্তের সঙ্গে কথা বলেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। মহকুমাশাসক কেশপুরের বিডিওকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতার শুক্রবার বলেন, “পাইপ মেরামতের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পাইপ মেরামতের চেষ্টা চলছে। ডায়েরিয়ার পরিস্থিতিও এখন নিয়ন্ত্রণে। ফলে, উদ্বেগের কিছু নেই।” |