হামলা-হুমকি-সন্ত্রাসের আবহে ভোট ব্যারাকপুরে
ছাপ্পা ভোট ও বাইক বাহিনীর তাণ্ডবের অভিযোগ, সিপিএমের পার্টি অফিস ভাঙচুর, রেল ও রাস্তা অবরোধ সার্বিক ভাবে ব্যারাকপুরের দু’টি ব্লকে ভোটচিত্র ছিল এটাই।
শুক্রবার সকালের দিকে বৃষ্টির কারণে বুথে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ কম। তবে বেলা বাড়তেই শুরু হয় গণ্ডগোল। ব্যারাকপুর ২ ব্লকের বন্দিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরীপুর গ্রামের ৭৫ ও ৭৬ নম্বর বুথে সিপিএমের এজেন্টকে বার করে দেওয়া ও সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, চালানো হয় গুলি। পড়ে বোম। গণ্ডগোল চলার সময়ে এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর দেখা পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ব্লক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, ম্যাজিস্ট্রেট। পরে আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রশাসন অবশ্য বোমাবাজির ঘটনা অস্বীকার করেছে।
গারুলিয়ায় সিপিএমের পার্টি অফিসে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিন দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ব্যারাকপুর ২ ব্লকের বিলকান্দা-২ পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, ১১৩ নম্বর বুথের গ্রামসভার তৃণমূল প্রার্থী সুনীল ঘোষকে রিভলবারের বাঁট দিয়ে মারা হয়। সুনীলবাবুর অভিযোগ, “বিলকান্দা-২ পঞ্চায়েতের সিপিএম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীর নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। সুনীলবাবু গ্রামসভার আসনে বিনা লড়াইতে আগেই জিতে গিয়েছেন। তাই তিনি বিলকান্দা-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। অন্য দিকে, খড়দহের রুইয়ার ১৩৭, ১৩৮ ১৪০, ১৪২, ১৪৩ নম্বর বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির নেতাদের অভিযোগ, এলাকায় চলেছে তৃণমূলের বাইকবাহিনীর তাণ্ডব। সিআরপিএফকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। বেলা সাড়ে ১১টায় শ্যামনগর স্টেশনে রেল অবরোধ ও শ্যামনগরের ফিডার রোড ও ঘোষপাড়া রোড অবরোড করে সিপিএম। তৃণমূলের লোকজন দিয়ে লাঠি পিটিয়ে এই অবরোধ তুলে দেয় বলে অভিযোগ। সিআরপিএফ ও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি।
ব্যারাকপুরের বন্দিপুরে একটি বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন। ছবি: বিতান ভট্টাচার্য।
বেলা ১২টা নাগাদ ফিডার রোডের গাড়ুলিয়ায় সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস ভাঙচুর করা হয়। সিপিএমের অভিযোগ, গাড়ুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা সুনীল সিংহের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন সত্যজিৎ নাথ নামে এক সিপিএম কর্মী। ব্যারাকপুর-১ ব্লকের কাউগাছিতে সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা অরুণ ব্রহ্মের অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করে তৃণমূল তাঁদের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর করেছে। বেলা সাড়ে ১২টায় বিটি রোডে ডানলপ মোড়ের কাছে অবরোধ করে সিপিএম। সেখানেও তৃণমূল তাঁদের পিটিয়ে তুলে দেয় বলে অভিযোগ। ১টা নাগাদ সোদপুর চৌমাথায় ফের অবরোধ করে সিপিএম। এ বার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।
বিলকান্দায় জখম দুই তৃণমূলকর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
এরপর সিপিএমের ব্যারাকপুর জোনাল কমিটির অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের পাঁচ মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। সিপিএমের ব্যারাকপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সুব্রত সেনগুপ্তের দাবি, “শ্লীলতাহানির সময় মহিলাদের গলার সোনার চেন ও মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। দুষ্কৃতীরা চিৎকার করে বলতে থাকে তোদের কামদুনি করে দেব।” ব্যারাকপুর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান ও ব্যারাকপুর শহরের যুব তৃণমূল সভাপতি উত্তম দাস বলেন, “ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছে সিপিএম অবরোধ করার প্রস্তুতি চালাচ্ছিল। ওঁদের পার্টি অফিসে লোকেরা জমায়েত হয়েছিল। আমাদের কিছু কর্মীর সঙ্গে বচসা হয়।” হামলা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। ব্যারাকপুর ১ ব্লকের জেঠিয়া পঞ্চায়েতেও কংগ্রেস প্রার্থী বাসুদেবকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। সিপিএম কংগ্রেস ও বিজেপি একসুরে অভিযোগ করে বলেছে, আধাসামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করেছে তৃণমূল। প্রশাসনসূত্রে খবর, ব্যারাকপুরের ২টি ব্লকে এসেছিল ১৪ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী। এ দিন অধিকাংশ জায়গাতেই আধাসামরিক বাহিনীকে দেখা গিয়েছে তাঁরা কোনও চায়ের দোকানে আড্ডা মারছেন অথবা বুথ থেকে দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আধাসামরিক বাহিনীর কয়েকজন জওয়ান বলেন, তাঁদের কাজ সর্ম্পকে পরিষ্কার কোনও নির্দেশ ছিল না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.