তিনি তৃণমূল প্রার্থী। অথচ, তাঁর পরিচয় ‘সিপিএমের সভাধিপতি’!
তিনি রাধানাথ বিশ্বাস। সভাধিপতি থাকার সময় তাঁর দাপটে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত। ১৯৭৮ থেকে ২০০৩, টানা ২৫ বছর ভোটের ময়দানে তাঁর ইনস্যুইং’এ মিডল স্টাম্প ছিটকে গিয়েছে বাঘা বাঘা নেতার। আজ সেই রাধানাথবাবুই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
রাহুল দ্রাবিড়ের মতো বিরোধীদের বিবিধ বিষাক্ত বোলিং সামলে উইকেটে টিঁকে থাকতেই ব্যস্ত। তাঁর বর্তমান দল তৃণমূল তাঁকে এমন একটি আসনে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে আনকোরা দলীয় কর্মীও দাঁড়াতে রাজি নন। তিনটি পঞ্চায়েতের একটি সিপিএম এবং দু’টি কংগ্রেসের দখলে। জেলা পরিষদের এই আসনে গতবার জয়ী সিপিএম। তার আগের বার কংগ্রেস। এই আসনে তৃণমূল বাউন্ডারি লাইনের ধারে কাছেও নেই। উজ্জ্বল অতীত সত্ত্বেও এমন ‘মরা পিচে’ ব্যাট করতে পাঠানো হল কেন রাধানাথকে? তাঁর বক্তব্য, “দল জানে আমার অতীত রেকর্ডই আমাকে জিতিয়ে দেবে।”
২০০৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কারের পরে ২০০৯-এ তৃণমূলে যোগ দেন রাধানাথ। এ বার জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়ে আবার কিছুটা হলেও প্রচারের আলোয়। জোড়া খুনের ঘটনায় জেল-ছুট একদা সিপিআইয়ের দাপুটে নেতা অজিত দাস রাধানাথবাবুর জন্য জানপ্রাণ লড়িয়ে দিচ্ছেন। এলাকার মানুষ তাই তাঁদের বলছেন ‘লাল তৃণমূল’। |
|
রাজনীতি, রাজনীতি এবং রাজনীতি |
পেশা |
চুন-সুরকির কারবার |
সুযোগ পেলেই এক কাপ লাল চা |
নেশা |
সাতসকালে খবরের কাগজ |
ভোট-রাজনীতি গুলে খেয়েছেন |
প্লাস পয়েন্ট |
স্থানীয় বাসিন্দাদের নাড়িনক্ষত্র জানা |
দলেরই একাংশ না-খুশ |
মাইনাস পয়েন্ট |
আত্মবিশ্বাসে সব্বাইকে ফুৎকার |
বিরোধী আসনে বসে তো ঘুমোতেন |
প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে |
দুর্নীতিতে একেবারে পিএইচডি |
বহিরাগত, লোকে চেনেই না |
লোকে বলে |
সব কিছুতেই অজয়দা (অজয় দে) |
|
কিন্তু শান্তিপুরের পুরনো তৃণমূল কর্মীরা যে এই ‘লাল তৃণমূলী’দের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন এমন ভরসা নেই। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের নিমাই বিশ্বাসের ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ও বেশ ভাল। স্থানীয় বিধায়ক অজয় দে-র ছত্রছায়ায় থাকা নিমাইবাবু ১৯৮৮ সালে শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা হন। পরের বছর আবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ২০০৩ সালে আবার জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়ে জিতে বিরোধী দলনেতা হন।
গত নির্বাচনে এই আসন থেকে সিপিএম জিতলেও বিধানসভা ভোটের নিরিখে লড়াইটা যে কঠিন হয়ে পড়েছে, মেনে নিয়েছেন সিপিএম প্রার্থী মদন বিশ্বাস। তবে বরাবরই এই এলাকায় সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী সিপিএম। সিপিএমের বিশ্বাস, ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী রাধানাথবাবু কংগ্রেসের ভোট-ব্যাঙ্কে থাবা
বসাবেন। সেই সুযোগে বেরিয়ে যাবেন মদনবাবু। যাবেন কি? |