গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া
কলেজে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ টিএমসিপি-র
লেজে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে খোদ শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।
শুক্রবার মেদিনীপুর শহর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এক স্মারকলিপি দেওয়া হয়। যে স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রায় ৯৫ শতাংশ কলেজে অনৈতিক ভাবে মেধা তালিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি চলছে! সংগঠনের শহর সভাপতি বুদ্ধ মণ্ডল বলেন, “আমাদের কাছে বেশ কিছু নথি রয়েছে। তার ভিত্তিতে এই অভিযোগ করেছি। কার অঙ্গুলিহেলনে এ সব হচ্ছে, তা প্রকাশ্যে আসা দরকার। আমরা বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছি।” এই প্রথম নয়, এর আগে সংগঠনের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরিও ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। মেদিনীপুর কলেজে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছিলেন।
খোদ শাসকদলের ছাত্র সংগঠন আচমকা এমন অভিযোগ তুলল কেন?
দলেরই এক সূত্রে খবর, এর পিছনে রয়েছে টিএমসিপি-র দ্বন্দ্ব। ওই সূত্রের দাবি, সংগঠনের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে শহর সভাপতি বুদ্ধর। গত বুধবার ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন রমাপ্রসাদ। ওই দিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেদিনীপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। কলেজে স্মারকলিপি দেওয়া হয় ছাত্রসংসদের প্যাডে। জমা দেন টিএমসিপি-র জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিতরা। যেখানে লেখা হয়, ‘আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও রকম দুর্নীতি মেনে নেব না।’ অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয় টিএমসিপি-র প্যাডে। জমা দেন রমাপ্রসাদ নিজেই। যেখানে লেখা হয়, ‘কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন মেরিট লিস্ট এবং নোটিসের বাইরে বিভিন্ন অনার্স বিষয়গুলোয় অনৈতিক সুপারিশের ভিত্তিতে ভর্তি করা হচ্ছে। ওই বেআইনি ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করে মেরিট লিস্ট অনুযায়ী ভর্তি করা হোক।” সঙ্গে তদন্তেরও দাবি জানানো হয়।
অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবারই কলেজের কাছে এক চিঠি পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে। অভিযোগটি সত্য কি না। জবাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছেন, অভিযোগটি মিথ্যে। ভর্তিতে অনিয়মের কোনও ব্যাপার নেই। প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন বিদায়ী পুরপ্রধান প্রণব বসু। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাসকদলের অন্দরেও শোরগোল পড়ে। বিস্মিত হয় শিক্ষক-মহলও। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে টিএমসিপি-র শহর কমিটি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রায় ৯৫ শতাংশ কলেজগুলোতে অনৈতিক ভাবে ভর্তি চলছে বলেই দাবি করা হয়েছে। সংগঠনের শহর সভাপতি বুদ্ধ বলেন, “যে ভাবে আমাদের সংগঠনের প্রতিবাদে সাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেদিনীপুর কলেজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন, তাতে আমরা খুশি। আশা-ভরসা দুই বেড়েছে। এদিন নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ করেছি। কিছু দাবি জানিয়েছি। বিভাগীয় তদন্ত হলে সব সামনে আসবে।”
এদিকে, ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুধীন্দ্রনাথ বাগ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যা জানতে চাওয়া হয়েছিল, তার জবাব দিয়েছি। অনিয়মের কোনও ব্যাপার নেই। যা হয়েছে, কলেজের অ্যাডমিশন কমিটির সিদ্ধান্ত মতোই হয়েছে।” কলেজ পরিচালন কমিটির সদস্য তথা যুব তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ চক্রবর্তীও বলেন, “মেদিনীপুর কলেজে ভর্তি নিয়ে কোনও অনিয়ম হয়েছে বলে জানা নেই।” বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী বলছেন? উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “দু’-একটি অভিযোগ পেয়েছি। সত্যি কি না খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। সোমবারের মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাব। তারপরই যা পদক্ষেপ করার করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.