|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
ছায়া ঘনাইছে... |
জল সইতে
কৌশিক ঘোষ
|
উদ্বোধনের পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক বছর। তবু ঠিক হল না কোন সংস্থা রক্ষণাবেক্ষণ করবে ওয়াটার পার্ক ‘বেণুবনছায়া’র।
দু’বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাটুলিতে এই পার্কের শিলান্যাস করেছিলেন। গত বছর এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়েছে। কিন্তু এখনও পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হল না। এর ফলে, ফাঁপরে পড়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই প্রকল্প নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, এই সমস্যা মেটাতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
|
|
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে পাটুলিতে
তিনটি পুকুর নিয়ে প্রায় ১৭ একর জমি জুড়ে একটি ‘ওয়াটার পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। এই ১৭ একর জমির মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১১ একর জমির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। কেএমডিএ সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। পরের পর্যায়ে বাকি প্রকল্পের কাজ হবে।
পার্কটির মধ্যে রাস্তা ছাড়াও রয়েছে শিশুউদ্যান, ফুড কোর্ট, উন্নতমানের ফোয়ারা, টিকিট কাউন্টার, প্রাতর্ভ্রমণকারীদের জন্য জিমন্যাসিয়াম। এ ছাড়াও রয়েছে পুরনো ট্রামের কামরা। এর মধ্যেই থাকবে রেস্তোরাঁর। পুকুরের মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি হয়েছে পাখিদের জন্য। পার্কে বসার জায়গা, বোটিং এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু এগুলি এখনও সর্বসাধারণকে এগুলি ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও কোথাও পুকুরের পাড় ভাঙা। এক দিকে, আগাছার জঙ্গলও হয়েছে।
ওয়াটার পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
এই প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র মুখ্য বাস্তুকার প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য বলেন, “কেএমডিএ এই প্রকল্প তৈরি করার পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে তা হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়।
এর পর সমীক্ষায়
দেখা যায়, ওয়াটার পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওই সংস্থা কেএমডিএ-কে যে পরিমাণ অর্থ দেবে তার চেয়ে বেশি অর্থ কেএমডিএ নিজেরাই পরিচালনা করে আয় করতে পারবে। সেই অর্থ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভাল ভাবেই ব্যবহার করা যাবে। এর পর, পুরনো সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।” তাঁর কথায়: “জনসাধারণের জন্য পার্কটি কিছু দিন বন্ধ
রাখা হয়। এখন দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকলেও টিকিটের কোনও ব্যবস্থা নেই। আপাতত পার্ক পাহারা দেওয়ার জন্য রক্ষী মোতায়েন রয়েছে। তবে রক্ষণাবেক্ষণের কিছু সমস্যা আছেই।” |
|
কেএমডিএ-র নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাথাপিছু ১০ টাকা করে টিকিটের দাম ধার্য হয়। প্রস্তাবিত এই টিকিটের দাম-সহ এই ‘ওয়াটার পার্ক’ কী ভাবে ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের নেতৃত্বে স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ এবং কেএমডিএ-র আধিকারিক-সহ একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, পার্কের প্রবেশ মূল্য সমেত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে এই কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে পড়ায় বিষয়টি এগোয়নি। রক্ষণাবেক্ষণ
না হলে পার্কের ক্ষতি হবে বলে কেএমডিএ-র এক আধিকারিকের আশঙ্কা। এই কমিটির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বলেন, “পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা পার্কটি ঘুরে দেখে কী ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় সেই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” এলাকার বাসিন্দা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “এই ওয়াটার পার্ক এলাকার ফুসফুস। ঠিক ভাবে ব্যবহার করা না হলে জায়গাটি নষ্ট হয়ে যাবে। পার্কের উদ্বোধনের কিছু দিনের মধ্যেই তা বন্ধও করে দেওয়া হয়।” পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল সাফাই) দেবব্রত মজুমদার তথা এই কমিটির অন্যতম সদস্য বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই পার্কটি বন্ধ ছিল। দুপুরের পর একটি নির্দিষ্ট সময়ে পার্কটি খোলা থাকছে। প্রাতভ্রর্মণকারীদের জন্য এই পার্ক খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছে না ঠিকই, তবে এই বিষয়টি মিটে গেলে আনুষ্ঠানিক ভাবেই পার্কটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে।” |
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
|
|
|
|
|
|