|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
বাড়ছে মশা |
বিনা যুদ্ধে...
কাজল গুপ্ত |
সরকারি প্রকল্পের জিনিসপত্র ডাঁই করে রাখা। পাশেই পড়ে রয়েছে অসংখ্য ডাবের খোলা। জমে রয়েছে জল। এ ছবি বিধাননগর পুরসভার ডিডি ব্লকের। অভিযোগ, শুধু এখানেই নয়, সল্টলেকের বেশ কিছু জায়গায় এমন অবস্থা। এই সব জায়গায় গড়ে উঠেছে মশার আঁতুড়। আরও খারাপ অবস্থা নয়াপট্টি, কুলিপাড়ার মতো সংযুক্ত এলাকা ও দত্তাবাদের। কিন্তু এই আবর্জনা নিয়ে পুরসভার কোনও মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি এ বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর, কলকাতা পুরসভা, বিধাননগর মহকুমা ও বিধাননগর পুরসভার বৈঠক হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। |
|
এর মধ্যেই ২০ হাজারেরও বেশি বাড়িতে সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু বাসিন্দার শরীরে মশাবাহিত রোগের জীবাণু মিলেছে। অনেক বাড়িতে জমা জলে মশার লার্ভাও মিলেছে। সেই অনুযায়ী প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়েছে পুরপ্রশাসন। পাশাপাশি, সচেতনতা বাড়াতে প্রচারও শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। লিফলেট বিলি হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাপক ভাবে মশার তেল ছড়ানোর কাজও চলছে বলে দাবি প্রশাসনের। যদিও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মশা নিয়ন্ত্রণে জন্য প্রশাসনের তেমন কোনও চেষ্টা চোখে পড়েনি। পুরসভা সূত্রে খবর, ‘এই’ ব্লকে এক মহিলার শরীরে ডেঙ্গির লক্ষণ দেখা গিয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে এখনও ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও খবর নেই। ‘এই’ ব্লকেই গত বছর একাধিক বাসিন্দার শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বছরভর নিয়মিত মশা-নিয়ন্ত্রণের কাজ হয়। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যান।’’ ‘ইই’ ব্লকে মশার জ্বালায় সন্ধ্যার পরে জানলা খোলা দায় হয়ে উঠেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
|
|
‘ডিডি’ ব্লক সল্টলেকের অফিস পাড়া। এখানে একাধিক জায়গা ঝোপঝাড়ে ভরে উঠেছে। পড়ে রয়েছে মেট্রো প্রকল্পের বহু যন্ত্রাংশ। জমে আছে বৃষ্টির জল। জল জমে আছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের কয়েকটি অংশেও। গত বছর এখানকার সাই কমপ্লেক্সে একাধিক শিক্ষার্থী মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দত্তাবাদের নানা জায়গায়ও জল জমে থাকে। এক নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টি, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছবিটাও প্রায় এক। এখানে পুরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও উঠেছে। যেমন, স্থানীয় বাসিন্দা ময়না মণ্ডলের কথায়: ‘‘মূল সল্টলেকে কামান দাগা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি পুরসভার লোক যাচ্ছে। আমাদের এখানে তেমন কিছু হচ্ছে না।’’
ঝোপঝাড় গজিয়ে ওঠা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস জানা বলেন, “আগে শুধু পুজোর আগে জঙ্গল সাফ করা হত। এখন সারা বছর নিয়মিত কাটা হয়। বিভিন্ন ব্লকের ভিতরে যদি ঝোপজঙ্গল হয় তা হলে সেগুলি স্থানীয় কাউন্সিলরের তথ্যের ভিত্তিতে সাফ করা হয়।”
|
|
বাসিন্দাদের একটি সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘প্রশাসন চেষ্টা করছে। তবুও সমস্যা রয়েছে। বাসিন্দা ও ব্লক কমিটিগুলিকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে।’’ প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ সিপিএমের নন্দগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাসিন্দা ও ব্লক কমিটিগুলিকে সঙ্গে নিয়ে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে। ঝুপড়ি এলাকাগুলি পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিরোধ-ব্যবস্থা জোরদার করেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’’
বিধাননগর পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সার্বিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়মিত কাজও চলছে। কোথাও খামতি থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।’’ |
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|