দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
ফুটবল লিগ
জল-আতঙ্ক

পানীয় জল দূষিত হয়ে যাবে এই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বেহালার ঘোলসাপুর সুপার মার্কেট সংলগ্ন আবাসনের বাসিন্দারা। আবাসন সংলগ্ন বাজারের মধ্যে যে জলাধার রয়েছে, সেখান থেকেই পুরো আবাসনে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জলাধারের উপরেই বসছে পুরসভা পরিচালিত মুরগির মাংস বিক্রির দোকান। ফলে যে কোনও সময়ে কাটা মুরগির রক্ত, বিষ্ঠা বা দেহাংশ মিশে জলাধারের জল বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, বাধ্য হয়ে জল কিনে খাচ্ছেন আবাসিকেরা।
ওই আবাসনের বাসিন্দা নীলাঞ্জনা সেনের কথায়: “জল খেতে ভয় পাচ্ছি। ওই জল খেলে পেটের রোগ অনিবার্য।” স্থানীয় বাসিন্দা সুমিতা সেন বললেন, ‘‘দিন দশেক আগে ওই জলাধারের উপরে পুরসভার তরফ থেকে কম দামে মুরগি মাংসের দোকান খোলা হয়। ওখান থেকে আমরাও মাংস কিনেছি।”
আবাসিকদের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেল ঘোলসাপুর সুপার মার্কেটে ঢুকতেই। জলাধারের উপরে সার দিয়ে রাখা
রয়েছে মুরগি। মুরগিরা যাতে গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে সে জন্য চলছে ‘টেবল ফ্যান।’ তারই এক পাশে কাটা হচ্ছে মুরগি। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কাটা মুরগির পালক, দেহাংশ। দোকানের বাইরে ক্রেতাদের লাইন। উল্টো দিকে রয়েছে ইএসআই-এর ‘আউটডোর’ চিকিৎসালয়।
এই রকম একটি জায়গাকে মাংস বিক্রির দোকানের জন্য বেছে নেওয়া হল কেন? ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডল বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। যা বলার বাজার বিভাগের মেয়র পারিষদ বলবেন।” ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষের কথায়: “খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। কোনও ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে দোকান সরাতে হবে।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোলসাপুর সুপার মার্কেট সংলগ্ন আবাসনের বাইরের অংশটি দেখভালের দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার। আর ভিতরের অংশের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। এই আবাসনে শুধু আবাসিকেরাই থাকেন না, পূর্ত দফতরের বিভিন্ন বিভাগের অফিসও রয়েছে। এই সব অফিসের কর্মচারীরাও ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, এই ঘটনার পর থেকে অফিসে এসে তাঁরা জল খান না। বাইরের চায়ের দোকানে গিয়ে জল খান। অনেকে আবার জল কিনেও আনেন।
আবাসনের ভিতরের অংশ এখন রাজ্য পূর্ত দফতরের সাউথ সাবার্বান বিভাগের দায়িত্বে। এই বিভাগের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার বিষ্ণু বক্সি বলেন, “ওখানকার আবাসিকেরা আমায় চিঠি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করব।” পাশাপাশি, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ বলেন, “আমি জানতাম না ওখানে জলের ট্যাঙ্ক আছে। ওখানে দূষণ ছড়ালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.