দক্ষিণ কলকাতা
বিশ বাঁও
টাওয়ারের জট

ছরখানেক আগে পুর-এলাকায় বেআইনি মোবাইল টাওয়ার চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা। বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে সব বাসিন্দা বেআইনি ভাবে মোবাইল টাওয়ার বসিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথম দিকে বেশ তোড়জোড় করেই এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে এই প্রক্রিয়া চলছে অত্যন্ত মন্থর গতিতে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই পুরবোর্ডে বামপন্থীরা থাকাকালীন মোবাইল টাওয়ার বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল পুরসভার আয় বৃদ্ধি। কিন্তু তখনই বহু এলাকায় নিয়মবিধির তোয়াক্কা না করেই টাওয়ার বসানো হয় বলে অভিযোগ।
বর্তমান বোর্ডের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নিয়ম মানেনি পুরনো বোর্ড। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিপিএমের কমল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমে আমরাই মোবাইল টাওয়ার বসানোর অনুমতি দিয়েছিলাম। পরে অনেক জায়গায় আমাদের চোখ এড়িয়ে টাওয়ার বসেছে। বর্তমান বোর্ডকে জানিয়েছি, যে সব সংস্থার অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিক আছে তাদের টাওয়ার রেখে, বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।” তবে চোখ এড়িয়ে অনেক জায়গায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ থেকে এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০০৯ নাগাদ পুর এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর কারবারের রমরমা বাড়ে। এর পরে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় ক্ষমতা বদল হয়ে তৃণমূল এবং কংগ্রেস পরিচালিত জোটের বোর্ড তৈরি হয়।
নতুন বোর্ড পুরসভার আয় বৃদ্ধির নানা উপায় খুঁজতে থাকে। তখনই বেআইনি টাওয়ারের বিষয়টি তাদের নজরে আসে। এই বোর্ড এলাকায় নতুন করে টাওয়ার বসানোর অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে অনেক বেআইনি মোবাইল টাওয়ার চিহ্নিত করেছে পুরসভা। এই কাজে যাঁরা যুক্ত তাঁদের অনেককে সতর্ক করে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। যে সব বাসিন্দা বাড়ি বা জমির অংশ বিভিন্ন মোবাইল সংস্থাকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ সেই সব বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলবে। এ ক্ষেত্রে বাড়ি বা জমির ব্যবহৃত অংশ বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেই ধরা হবে।
রাজপুর-সোনারপুরের পুর-চেয়ারম্যান তৃণমূলের ইন্দুভূষণ ভট্টাচার্য বলেন, “যাঁদের বাড়ি বা জমিতে মোবাইল টাওয়ার বসানো রয়েছে তাঁদের এই সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিক থাকলে কর বাড়বে। আর কাগজপত্র ঠিক না থাকলে সেই সব বাড়ি বা জমির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.