আজহার অবশেষে পরামর্শ দিলেন সচিনকে
চিন তেন্ডুলকর নিয়ে যখন ক্রিকেট বিশ্বের ছোট-বড় সব ব্যক্তিত্ব কিছু না কিছু মতামত রেখেছেন, তখন একজন ব্যতিক্রমী ভাবে সচিন-প্রসঙ্গে বরাবর নীরব থেকে গিয়েছেন। অন্য কোনও দেশের নয়, তিনি ভারতেরই প্রাক্তন অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন। সচিনেরও প্রাক্তন জাতীয় অধিনায়ক।
ক্রিকেটজীবনের সায়াহ্নে পৌঁছনো সচিন হালফিলে বেশ কয়েক বার দ্রুত ইনকামিং ডেলিভারিতে বোল্ড হচ্ছেন। কী ভাবে সেটা এড়ানো যায়, সচিনকে সেই পরামর্শ দিয়েছেন আজহার। তাঁর কথায়, “এটা যে যার নিজের মতো করে মোকাবিলা করবে নিশ্চয়ই। কিন্তু আমার মনে হয়, সচিন চেস্ট-অন স্টান্স নিয়ে দেখতে পারে। তাতে পেসারদের খেলতে সুবিধে হবে। বয়সের সঙ্গে রিফ্লেক্স মন্থর হয়ে যায়। কিন্তু সচিনের মতো টেকনিক থাকলে সামলে দিতে পারবে।”

এ দিন সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আজহার আরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, “সাইড-অন স্টান্স নিলে ডেলিভারিটা এক চোখে দেখা যায়। কিন্তু চেস্ট-অন স্টান্স নিয়ে খেললে দুটো চোখ দিয়েই বলটা দেখা যাবে। এতে সুইংটা কভার করতেও সুবিধে হয়। আমার মনে হয় ইনসুইঙ্গার খেলতে সচিন বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করবে। আর কয়েকটা বড় রান করে নিতে পারলে ও নিজের স্বাভাবিক সাইড-অন স্টান্সে ফিরে আসতে পারবে।”
ভারতের হয়ে ৯৯ টেস্ট এবং ৩৩৪ ওয়ান ডে খেলা আজহার নিজের কেরিয়ারেও অফ-ফর্মের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। ১৯৮৯-র পাকিস্তান সফরে যেমন জাহির আব্বাসের টিপস তাঁকে খুব সাহায্য করেছিল। ব্যাটের গ্রিপ পাল্টানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন জাহির। যে প্রসঙ্গে আজহার বলছেন, “প্রথম দিকে বুড়ো আঙুলে বেশ ব্যথা করত। ব্যাটের হ্যান্ডেল থেকে ডান হাতটা সরে আসত। মানিয়ে নিতে বেশ সময় লেগেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিনিসটা কাজে লেগেছিল।”
বয়সের হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছনো আজহার বর্তমানে ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে, কংগ্রেসের সাংসদ হিসেবে বেশি পরিচিত। তবে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে এখনও যথেষ্ট উৎসাহী এবং ওয়াকিবহাল। শিখর ধবন নিয়ে যেমন আজহার বলেছেন, “হাই-অন-হ্যান্ডল স্টান্স নিয়ে খেলে বলে শিখরের ব্যাটিং দেখতে খুব ভাল লাগে। আমাদের প্রজন্মে যেমন ছিল অ্যালান ল্যাম্ব আর মার্ক ওয়। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দেখলাম শর্ট বল খেলার সময় শরীরটাকে পিছনে নিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ওর আসল পরীক্ষা। ডেল স্টেইন, মর্নি মর্কেলদের খেলার আগে ওকে সমস্যাটা মেটাতে হবে।”
পাশাপাশি বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা এবং রোহিত শর্মার মতো ভারতের তরুণ ব্যাটিং প্রজন্মের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আজহার। বলেছেন, “যে সব ক্রিকেটার সব সময় রান করতে চায়, আমার তাদের ভাল লাগে। বিরাট আর পূজারা দু’জন আলাদা ঘরানার হলেও প্রতিভা দুর্দান্ত। রোহিতকে নিয়ে আমি বরং সামান্য হতাশ। ওর থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল। রোহিত অসম্ভব প্রতিভাবান। ওর মতো শট খেলতে আমি অনেককেই দেখিনি। আমার মনে হয় এই তিন জন আগামী সাত-আট বছর ভারতীয় ব্যাটিংকে টানবে।”
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দু’জনের অধিনায়কত্বের স্টাইলের তুলনা চলে? আজহারের উত্তর, “সৌরভ ওর সময় খুব ভাল করেছে। উপমহাদেশের বাইরেও টেস্ট জিতেছে। আর ধোনিকে নিয়ে বলতে হলে বলব, রেজাল্টই ওর হয়ে সব কথা বলছে। ও সফল। আর সাফল্যের বিরুদ্ধে কোনও কথা চলে না।” ধোনি নিয়ে তাঁর আরও সংযোজন, “একটা সময়ে পরপর আটটা টেস্ট হেরেছিল। তখন মনে হয়েছিল ওর বিশ্রাম দরকার। কিন্তু নির্বাচক আর বোর্ডের ওর উপর আস্থা ছিল। খুব ভাল ভাবে ফিরে এসেছে ধোনি।”
আজ্জুর টিপস
সচিন, চেস্ট-অন স্টান্স নিয়ে দেখতে পারো। তাতে পেসারদের খেলতে সুবিধে হবে। সাইড-অন স্টান্স নিলে ডেলিভারিটা এক চোখে দেখা যায়। কিন্তু চেস্ট-অন স্টান্স নিয়ে খেললে দুটো চোখ দিয়েই বলটা দেখা যাবে। এতে সুইংটা কভার করতেও সুবিধে হয়। মনে হয় তাতে ইনসুইঙ্গার খেলতে তুমি বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করবে। আর কয়েকটা বড় রান করে নিতে পারলে নিজের স্বাভাবিক সাইড-অন স্টান্সে ফিরে আসতে পারবে তুমি।
ইদানীং কালের ব্যাটসম্যানদের ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে এসে পেস বোলিং খেলার স্বভাব মোটেই পছন্দ নয় আজহারের। বলছেন, “ক্রিজের বাইরে দাঁড়িয়ে একশো চল্লিশ প্লাস বোলারদের খেলাটা আমি সমর্থন করি না। কারণ তাতে এক সেকেন্ড সময় কমে যায়। একই সঙ্গে বলটা আরও কয়েক কিলোমিটার জোরে আসে।” সঙ্গে যোগ করেছেন, “লোকে সুইং বোলিং খেলার সময় এটা সাধারণত করে। যাতে বল সুইং করার আগেই খেলে দেওয়া যায়। কিন্তু আমি যখন ওয়াসিম আক্রমকে খেলতাম, মনে হত ক্রিজের মাঝামাঝি দাঁড়ালেই সুবিধে। ওই যে কয়েক সেকেন্ড বাড়তি সময় পাওয়া যেত, তাতে শট বাছাইয়ে সুবিধে হত। কারণ এমনিতে আমি ব্যাকফুট প্লেয়ার।”
তেন্ডুলকর আউট
টেস্ট ইনিংস ৩২৭
কট ১৬৮ বোল্ড ৫৪
এলবিডব্লিউ ৬২
স্টাম্পড
রান আউট
বাকি ৩৩ বার নট আউট

শেষ ৫০ টেস্ট ইনিংসে
কট ২২ বোল্ড ১১
এলবিডব্লু ১১
রান আউট
নট আউট

সচিন নন, ক্রীড়ামন্ত্রক চায় ধ্যানচাঁদকে ভারতরত্ন
খেলার জগত থেকে সর্বপ্রথম ভারতরত্ন সচিন তেন্ডুলকর দেখতে চান অনেকেই। একাধিক দাবিও উঠেছে। কিন্তু দেশের ক্রীড়ামন্ত্রক সচিন নন, দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন-র জন্য হকি কিংবদন্তি ধ্যানচাঁদের নাম সুপারিশ করল আজ। সুপারিশের চিঠি ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু ধ্যানচাঁদের নামই পাঠানো হয়েছে, ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে। তবে মাস্টার-ব্লাস্টার তেন্ডুলকরের পাশাপাশি এর আগেও ভারতরত্নের জন্য তিন বারের অলিম্পিক সোনাজয়ী, হকির জাদুকর-এর নাম উঠেছিল। চলতি মাসের গোড়ায় ধ্যানচাঁদের ছেলে অশোক কুমার-সহ ছয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। এ দিন অশোক কুমার বলেন, “পুরস্কার দেওয়া হোক বা না হোক, ধ্যানচাঁদের নাম যে সুপারিশ করা হয়েছে এটাই আমাদের পরিবারের কাছে বিরাট সম্মানের। অন্য কোনও নাম নেই। তাই আশা করছি এই বছরই তিনি ভারতরত্ন পাবেন।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.