|
|
|
|
করিমগঞ্জ |
ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগে উত্তেজনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে তিন দিন ধরে উত্তাল করিমগঞ্জ। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ এবং দু’পক্ষের আন্দোলনের হুমকিতে প্রকৃত সত্য খুঁজে বের করতে জেলাশাসক ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। গাড়িতে উঠেছিল রাকেশনগরের মহাদেব উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জুলি তারিয়াং। অভিযোগ, স্কুলের সামনে গাড়ি থামাতে বললে চালক কামরুল হক না থামিয়ে বরং গতি বাড়িয়ে দেয়। আগে থেকেই গাড়িতে বসা ছিল দুই যুবক। তারা চালককে আরও জোরে চালাতে নির্দেশ দেয়। সামান্য দূর যেতেই বেহাল রাস্তার দরুন গাড়ির গতি কমাতে হয়। জুলি সে সময় চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে ঝাঁপ দেয়। স্থানীয় মানুষ গাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। কামরুল ধরা পড়লেও পালিয়ে যায় অন্য দুই যুবক। ততক্ষণে স্কুলে খবর পৌঁছে যায়। ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে এসে গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। কামরুলকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। আদালতের নির্দেশে সে এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। অন্য দিকে, জুলিকে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার আঘাত গুরুতর নয় বলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় ভাঙা-বদরপুর হালকা যানমালিক সংস্থা ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কামরুলকে বিনা দোষে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। তাদের যুক্তি, ছাত্রছাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকে বলে ঠিক স্কুলের সামনে গাড়ি থামানো যায় না। তাই কামরুল একটু এগিয়ে গিয়ে তাকে নামাতে চেয়েছিল। মোটেও কেনও অসৎ উদ্দেশ্য তার ছিল না। গাড়ির অন্য দুই যুবকের সঙ্গে তার পরিচয়ও নেই বলেই জানান গাড়িমালিক ও চালকরা। তাঁদের কথায়, জুলির মতো ওরাও রাস্তা থেকেই উঠেছিল। কামরুলকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে এবং তাকে মারধরের বিচার চেয়ে সংগঠন তিন দিনের জন্য ভাঙা-ভৈরবনগর রোডে যান ধর্মঘটের ডাক দেয়। তবে কাল প্রথম দিনেই এ নিয়ে হাঙ্গামা বাধে। মাছের গাড়ি আটকে দিলে খেপে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। দু’পক্ষে হাতাহাতি শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে গাড়ি মালিকরা তাঁদের দাবিতে অনড় রয়েছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
আজ জেলাশাসক সঞ্জীব গোহাঁই বরুয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খাসি ছাত্র সংস্থা এবং মৎস্যজীবী ইউনিয়ন। খাসি সম্প্রদায়ের মেয়েকে অপহরণের চেষ্টায় খাসি ছাত্র সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক রূপক গুপ্ত সে দায়িত্ব পালন পালন করবেন। আর তদন্তের আগে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে আজ পাশ কাটিয়ে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে কে গুপ্ত এবং ডেপুটি পুলিশ সুপার আর শর্মা। জেলাশাসক জানিয়ে দিয়েছেন, তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের কোনও মতেই রেহাই মিলবে না। তাঁর দাবি, সামান্য উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। |
|
|
|
|
|