|
|
|
|
অবসরের বয়স নিয়েও একই রায় সুপ্রিম কোর্টের |
|
ইউজিসির বেতনহার মানতে বাধ্য নয় রাজ্য
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়ঃসীমা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্ধারিত বেতন-কাঠামো মানতে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বাধ্য নয় বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, অবসরের বয়ঃসীমা ও বেতনহারের ব্যাপারে ইউজিসি-র সুপারিশগুলি মানা হবে কি না, রাজ্য সরকারই সেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে শীর্ষ আদালত শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে। কারণ, রাজ্য সরকারেরও শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। এবং এ ক্ষেত্রে নিজেদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার।
২০০৬ সালে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল। ২০০৯-এর ১ এপ্রিল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেই হারে বেতন পেয়ে আসছেন। কিন্তু তার আগের ৩৯ মাসের বকেয়া টাকার ৮০ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের, ২০ শতাংশ দেবে রাজ্য। কেন্দ্র ওই বকেয়া এবং অবসরের বয়সের বিষয়টি একসঙ্গে জড়িয়ে দেয়। তারা জানিয়ে দিয়েছিল, অবসরের বয়ঃসীমা ৬৫ বছর না-করলে ওই বকেয়া অর্থ মেটানো হবে না। বিভিন্ন রাজ্যের চাপে কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত পিছু হটে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে। তারা জানায়, অবসরের বয়ঃসীমার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যের সরকারই।
সংবাদ সংস্থার খবর, রাজ্য সরকার পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ইউজিসি-র সব নিয়মই মানতে বাধ্য কি না, তা জানতে চেয়ে কিছু রাজ্য ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি দল সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আর্থিক অবস্থা-সহ বিভিন্ন দিক বিচার করে এই সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সেখানকার সরকারই।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগেই জানিয়েছে, শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করা সম্ভব নয়। মূলত তরুণ-তরুণীদের সুযোগ দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে সরকারি সূত্রের খবর। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাজ্য সরকার খুশি। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “অবসরের বয়স নিয়ে সরকার নিজেদের সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া বেতন কমিশনের সুপারিশ নিয়ে গেজেট-বিজ্ঞপ্তির সময়েই সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ওই সব সুপারিশ মানা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। কোনও রাজ্য চাইলে সুপারিশগুলি মানতে পারে।”
ইউজিসি নির্ধারিত বেতন-কাঠামো না-মানলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বা ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ। তিনি বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকারা দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন-কাঠামো আদায় করেছিলেন। সেই বেতন-কাঠামোর পরিবর্তন হলে শিক্ষকেরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি তথা ওয়েবকুটার অন্যতম সদস্য কেশব ভট্টাচার্য জানান, ৪০ শতাংশেরও বেশি শূন্য শিক্ষক-পদে আংশিক সময়ের শিক্ষক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। অথচ দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার পরে ৬০ বছর বয়সে এক জন শিক্ষককে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা তাঁরা মানতে নারাজ। তাই অবসরের বয়স বাড়ানোর দাবি। সারা বাংলা শিক্ষক সমিতি বা আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, “কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অবসরের বয়স ৬৫, রাজ্যে ৬০। আমরা এই তারতম্যের বিরোধী।” |
|
|
|
|
|