শুধু মেট্রো শহর নয়। এ বার ছোট ও মাঝারি শহরের মধ্যবিত্তদের ড্রয়িং রুমেও আধিপত্য কায়েম করতে উঠেপড়ে লেগেছে ইংরেজি সিনেমার সমস্ত চ্যানেল। কারণ ইংরেজি সিনেমার টিভি দর্শকের বাজার সেখানে ৩০% হারে বাড়ছে। যা দখলের লড়াইয়ে চ্যানেলগুলির প্রধান হাতিয়ার ‘অ্যাকশন’ ফিল্ম। সেই সঙ্গে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দর্শক টানার বিপণন কৌশলেও জোর দিচ্ছে তারা।
গত পাঁচ বছরে ছোট-মাঝারি শহরগুলিতে ইংরেজি বলতে পারা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে এক কোটিরও বেশি। মেট্রো শহরে যেখানে এই বৃদ্ধির হার ১৭%, সেখানে ওই সব শহরে তা ২৫%। এই পরিসংখ্যানেই লাভের গন্ধ পাচ্ছে সোনি পিক্স, স্টার, এইচবিও, মুভিজ নাও-সহ ইংরেজি সিনেমার বিভিন্ন চ্যানেল। দৌড়ে এগিয়ে থাকতে সকলেই ঝুঁকছে অ্যাকশন ফিল্ম কেনার দিকে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ১০০টি জনপ্রিয় ইংরেজি সিনেমার ৮৩টিই অ্যাকশনধর্মী। জনপ্রিয়তার এই পারদ মেপেই স্টুডিওগুলি ফিল্ম তৈরি করছে। সোনি পিক্স-এর প্রধান সৌরভ ইয়াগনিক বলেন, “ভাষা ও সংস্কৃতির বাধা সহজেই টপকে যায় অ্যাকশন ফিল্ম। স্পাইডারম্যান বা বন্ড ফিল্মের আবেদন প্রায় সকলের কাছেই সমান। টিভিতে এ ধরনের সিনেমার ‘প্রিমিয়ার’ করেই দর্শকদের কাছে পৌঁছেছি আমরা।” মেন ইন ব্ল্যাক, দ্য অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান, অবতারের পাশাপাশি বন্ড ফিল্মের সত্ত্ব কিনে নেওয়ার পেছনেও একই যুক্তি কাজ করেছে বলে তাঁর দাবি।
এই ভাবনা থেকেই শুধু অ্যাকশন ফিল্ম দেখাতে আলাদা চ্যানেল এনেছে স্টার গোষ্ঠী। পিছিয়ে নেই এইচবিও। দু’টি চ্যানেলেরই দাবি, ইংরেজি ফিল্মের ৭৫% দর্শক পুরুষ। তার আবার ৫৬ শতাংশের বয়স ১৬-২৯। ফলে এদের পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। আর সেই অনুযায়ীই তৈরি হচ্ছে বিপণন কৌশল। সোনি পিক্সের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুললে আখেরে লাভ হয়। ফেসবুকে মেন ইন ব্ল্যাক বা দি অ্যামেজিং স্পাইডারম্যানকে ঘিরে আলোচনার সুযোগ করে দিয়ে হাতেনাতে ফল মিলেছে, জানান সৌরভ। কারণ ইংরেজি ফিল্মের অধিকাংশ দর্শকই বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ভক্ত।
ফিকি-কেপিএমজির রিপোর্টও বলছে, টিভি দর্শকের ১% ইংরেজি সিনেমার চ্যানেল দেখেন। যার দৌলতে ইতিমধ্যেই টিভি বিজ্ঞাপনের ৫০০ কোটি টাকার বাজার তাদের দখলে। অন্য দিকে, ডিজিটাল কেব্ল প্রযুক্তির মাধ্যমে টিভি দেখাও তাদের সুবিধা করে দিচ্ছে।
|