নিখোঁজ থাকা এক তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার হল জঙ্গল থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার আউশগ্রামের কুচিডাঙা গ্রামের মাঝিপাড়া লাগোয়া একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় অরণ্যদেব কোনারের (৪০) দেহ।
আউশগ্রামের রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা অরণ্যদেববাবু ১৬ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর বাড়ির লোকজন নিখোঁজ ডায়েরি করার পরে পুলিশ তদন্তে নেমে কুচিডাঙা গ্রামের নিতাই মুর্মুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। নিতাইবাবু অরণ্যদেববাবুর চাষবাসের কাজ দেখাশোনা করতেন। পুলিশের দাবি, জেরায় নিতাইবাবু দাবি করেন, ১৬ তারিখ রাতে অরণ্যদেববাবু তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কুচিডাঙায় যান। সেই সময়ে গ্রামেরই চার-পাঁচ জন সিপিএম সমর্থক আদিবাসী যুবক তাঁদের দু’জনকে অপহরণ করে জঙ্গলে আটকে রাখে। নিতাইবাবুর দাবি, সেই রাতে তাঁর সামনেই অরণ্যদেবকে খুন করে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়। তিনি কোনও রকমে পালিয়ে আসেন।
পুলিশ অবশ্য জানায়, এত দিন নিতাইবাবু এ বিষয়ে কাউকে কিছু কেন জানাননি, সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নিতাইবাবুকে নিয়ে জঙ্গলে ঢুকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সিপিএমের বননবগ্রামের কার্যালয় লুঠ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, এলাকায় তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী মিলে আদিবাসীদের উপরে অত্যাচার ও তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করছিল বলে অভিযোগ উঠছিল। তারই জেরে অরণ্যদেববাবু খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে অনুমান পুলিশের।
সিপিএমের গুসকরা জোনাল সম্পাদক অচিন্ত্য মজুমদারের আবার দাবি, “অরণ্যদেব বিভিন্ন অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিল। তার মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক। পুলিশের উচিত, তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করা। এর সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও এই ঘটনায় সিপিএমকে দায়ী করা হচ্ছে, সিপিএমের উপরে প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে।”
আউশগ্রামের তৃণমূল নেতা চঞ্চল গড়াইয়ের অবশ্য অভিযোগ, “অপহরণ করে খুন করা হয়েছে অরণ্যদেবকে। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই সিপিএম সমর্থক। তাই সিপিএম এই খুনের পিছনে রয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।” জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজা হচ্ছে। |