ইংরেজবাজার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে জিতিয়ে মালদহের মানুষ ‘পরিবর্তন’-এ সামিল হওয়ার যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটেও তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা সাংসদ তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদহের গাজল হাইস্কুল ময়দানে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে এ কথা জানান তিনি। তাঁর দাবি, “কৃষ্ণেন্দুবাবু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। উপনির্বাচনে তাঁকে হারাতে কংগ্রেসের মন্ত্রীরা বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মানুষ তাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাই একটা সময়ে মালদহে আমাদের সংগঠন দুর্বল থাকলেও এখন আশার আলো দেখছি।” |
গাজল হাইস্কুল ময়দানে।—নিজস্ব চিত্র। |
কংগ্রেসের মালদহের সাংসদ-বিধায়কদের ‘পরিযায়ী পাখি’ বলে কটাক্ষও করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “ভোটের সময়ে মালদহের কংগ্রেস সাংসদ-বিধায়কদের দেখা যায়। পরে তাঁদের খোঁজ পান না মানুষ। সে জন্যই মালদহের ভাঙন রোধ হয় না। ফি বছর বন্যায় ঘরদোর হারান বহু মানুষ। রাস্তাঘাট ঠিক হয় না। মানুষ মুখ ফেরাচ্ছেন দেখে কংগ্রেস-সিপিএম আঁতাত করে ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।”
এ দিন মালদহের তিনটি এলাকায় সভা করেন শুভেন্দুবাবু। প্রতিটি সভায় কংগ্রেস-সিপিএমের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও বিমান বসুকে আক্রমণ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, “নন্দীগ্রাম গণহত্যার নায়ক লক্ষ্মণ শেঠকে আমি এক লক্ষ ৭৩ হাজার ভোটে হারিয়েছি। কয়েকদিন আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী জালিওয়ানালবাগে এসে নতমস্তকে স্বীকার করেছেন যে জেনারেল ডায়ার যা করছিলেন তা ভুল করেছিলেন। এ রকমই একদিন না একদিন নন্দীগ্রামে গিয়ে গণহত্যার জন্য জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও বিমান বসুকে গলায় গামছা দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।”
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী তাঁর গাড়িতে হামলার যে অভিযোগ করেছেন, তা সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। কংগ্রেস ও সিপিএমের তরফে শুভেন্দুবাবুর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “যদি কংগ্রেস কাজ না করে তবে বছরের পর বছর মালদহের মানুষ কংগ্রেসকে কেন ভোট দিচ্ছেন? মানুষ কি বোকা? এবারেও জেলা পরিষদ কংগ্রেস দখল করবে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোট আদায় করা যাবে না।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমা ভেঙে যাওয়ায় মালদহে তৃণমূল ফাঁপড়ে পড়ে উল্টোপাল্টা তথ্য দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। মানুষ জবাব দেবেন।” |