কোথাও বনবস্তির স্কুলঘরে ভোট কেন্দ্র। কোথাও আবার নদী পাড় হয়ে যেতে হবে ভোটকেন্দ্রে। বর্ষার সময়ে চারদিকে জল থইথই। সাপ থেকে শুরু করে নানা ধরণের বিষাক্ত পোকা ঘরের ভেতরে শুকনো জায়গায় আশ্রয় নেয়। ফাঁকা স্কুল ঘরে রাত কাটানো ভোট কর্মী থেকে ভোট দিতে আসা সাধারণ বাসিন্দা যে কেউ যে কোনও সময়ে পড়তে পারে সাপের কবলে। সেই আশঙ্কা থেকেই চিকিৎসক এবং সাপের প্রতিষেধকের ব্যবস্থা রাখছে জেলা প্রশাসন। সাপে কামড়ানোর চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে আলিপুরদুয়ারে। ৬টি ব্লকে একটি করে টিম রাখা হবে।
আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শিশির লেপচা বলেন, “বর্ষা কালে সাপ বা অন্য বিষাক্ত পোকার উপদ্রব বেড়ে যায়। সে কথা মাথায় রেখে ভোট কর্মীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম তৈরি করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকবে।”
বিশেষ দলে চিকিৎসক ছাড়াও চিকিৎসা কর্মী থাকবেন। তাঁরা বিভিন্ন ব্লকে শিবির করে থাকবেন। তাঁদের সঙ্গে একটি গাড়ি রাখা হবে। প্রয়োজন মতো তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় যাবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আলিপুরদুয়ার মহকুমার ৬টি ব্লকে ১১৮০টি বুথে ভোট নেওয়া হবে। দূরত্বের কারণে বেশ কিছু বুথে ভোট কর্মীদের দুদিন আগেই যেতে হবে। কুমারগ্রাম, মাদারিহাট, সহ বেশ কিছু এলাকার প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি বুথে দুদিন আগে চলে যেতে হবে ভোট কর্মীদের। ডুয়ার্সের জঙ্গল, নদী পাড় হয়ে যেতে হবে এমন বুথ কেন্দ্রও রয়েছে জেলায়। বান্দাপানি, ভুটিয়াবস্তি এবং মধ্য ডুয়ার্সের ১৫টি বুথে নদী পেরিয়ে যেতে হবে। বন্যা পরিস্থিতিতে তৈরি হলে যে সব এলাকায় সেতু নেই সেখানে নদী পারাপার সমস্যা হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। ট্রাক্টরের ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন।
মহকুমাশাসক বলেন, “পাহাড়ি নদীর হড়পা বানে নৌকা পারাপারও সম্ভব হয় না। তাই ট্রাক্টরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দরকার হলে সীমা সুরক্ষা বলের সাহায্য নেওয়া হবে।” জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাতায়াতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য বন দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছে প্রশাসন। অসম সীমান্ত লাগোয়া বালাপাড়াতে সংকোশ নদী পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় নির্মল দাস বলেন, “নদীতে বেশি জল থাকলে নৌকায় যাওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি সাপের উপদ্রব তো রয়েইছে। প্রতি বছরই বর্ষার সময়ে দুর্ভোগ হয়। ভোটকর্মীদের যাতাযাতের ক্ষেত্রেও সর্তকতা নেওয়া উচিৎ।”
এক ভোট কর্মীর কথায়, “বর্ষার সময়ে অনেক জায়গাতেই বিষাক্ত নানা পোকামাকড় রয়েছে। বনবস্তি এলাকার বুথগুলিতে বিষাক্ত পোকা কামড়ানোর আশঙ্কা প্রবল। ভোট নিতে গেলে কেউ জখম হয়ে পড়লে খুবই সমস্যা হবে। প্রশাসন উদ্যোগী হলে ভাল। |