প্রাক-ভোট হানাহানি বাড়ছে
ঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা যেন বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলির সংঘর্ষে ব্যবহার হচ্ছে লাঠিসোটা, ধারাল অস্ত্র, এমনকী বন্দুকও। বুধবার রাতে উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারে একাধিক গণ্ডগোল, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইটাহারে তৃণমূল কর্মীরা প্রচার সেরে ফেরার পথে সিপিএমের একদল সমর্থকের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধলে ১১ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন তৃণমূল সমর্থক। একজনের গুলি লেগেছে। আহত তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে ১ জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্যরা রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই রাতেই কোচবিহার সদর মহকুমায় এক কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে ঢুকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও ঘটনায় কেউ জখম হননি। দিনহাটার নাজিরহাটে ফরওয়ার্ড ব্লকের এক কর্মীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। দুটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস। কোচবিহার সদরের পানিশালায় তৃণমূলের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস ও বাম সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আগামী ২২ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথাভাঙা সফরের আগে পরপর এই ধরণের ঘটনায় জেলায় উত্তেজনার পারদ বাড়ছে। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”
কংগ্রেসের অভিযোগ, কোতোয়ালি থানার হাড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থী ঠাকুর দাস রায়ের বাড়িতে বুধবার রাতে শতাধিক তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক হামলা চালায়। পরিবারের লোকেদের হুমকি দেওয়া ছাড়াও বাড়ির একটি দরজা ভেঙে দেওয়া হয়। পিছনের দরজা দিয়ে কোনওক্রমে পালিয়ে রাতভর পাটখেতে লুকিয়ে থাকেন ওই প্রার্থী। তাঁকে না পেয়ে বাড়িতে ওই তৃণমূল সমর্থকরা দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে চলে যান বলে অভিযোগ। ঠাকুরবাবু বলেন, “বাড়ির উঠোন থেকে একটি গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে। রাতভর পাট খেতে লুকিয়ে না থাকলে হয়ত ওঁরা প্রাণে মেরে দিত।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “এলাকায় হার হতে পারে বুঝতে পেরেই তৃণমূল সন্ত্রাস শুরু করেছে। পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফেও বুধবার রাতে দিনহাটার নাজিরহাটে ছোট গারলঝোরা এলাকায় দলীয় সমর্থক আঞ্জুমান বিবির একটি ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁর শাশুড়িকে মারধর করা হয়। দিনহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ কংগ্রেস এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের খরসোতা এলাকায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তাতে আশাদ আলি মন্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মীর পিঠে গুলি লেগেছে। মইদুর রহমান, ননুয়া আলি ও খলিল মন্ডল নামে আরও তিন তৃণমূল কর্মী ধারাল অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন। তাঁদের মাথায়, হাতে, বুকে ও পিঠে ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ টি আসনের মধ্যে ৮টি আসন দখল করে কংগ্রেস পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় আসে। ৪টি আসন সিপিএমের দখলে যায়। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে পালাবদল হতেই কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিলে পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে যায়। জেলা তৃণমূল সভাপতি ইটাহারের বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, “সম্প্রতি সিপিএম ছেড়ে সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু মানুষ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সেই কারণে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিশ্চিত হার বুঝতে পেরেই তৃণমূল কর্মীদের উপরে সিপিএম কর্মীরাই প্রথমে ধারাল অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে হামলা চালায়। আমাদের কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছি।
যদিও অমলবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল বলেন, “ওই পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএম শক্তিশালী হচ্ছে বুঝতে পেরে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে।” উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “উভয়পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে! অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.