খোলা আকাশের নিচেই চলছে মিড ডে মিল। এক জায়গায় রান্না করে রিকশা বা ভ্যানে স্কুলে স্কুলে পৌঁছানো হচ্ছে খাবার। আবার যাঁরা রান্না করছেন, তাদের নেই ‘অ্যাপ্রন’। শিলিগুড়ি শহরের ১৫১টি স্কুলের অধিকাংশতেই মিড ডে মিল নিয়ে এই অবস্থা চলছে বলে অভিযোগ উঠে আসল। চলতি সপ্তাহেই বিহারের ঘটনার পরেই মিড ডে মিল নিয়ে শহরে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। বৃহস্পতিবার সব কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ রুমা নাথ। যদিও বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর।
পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে শিলিগুড়ি এলাকায় থাকা ৩২টি আপার প্রাইমারি। ৮০ টি প্রাইমারি এবং জলপাইগুড়ি এলাকায় থাকা ১৪টি আপার প্রাইমারি ও ২৬টি প্রাইমারি স্কুলে চলছে মিড ডে মিল। পাশাপাশি, ৪ টি চাইল্ড লেবার স্কুলে চালু করা হয়েছে ওই ব্যবস্থা। তবে স্কুলগুলিতে কতটা সঠিক পরিবেশে তা চলেছে তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। রান্নার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছে তাঁদের কোনও অ্যাপ্রন নেই বলে জানান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের কাউন্সিলর শালিনী ডালমিয়া। পাশাপাশি খাবার আগে ছাত্রছাত্রীদের সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার কথাও অনেক কাউন্সিলর তোলেন।
নিয়ম অনুসারে, মিড ডে মিলের রান্নার পর পর তা রান্নার দায়িত্বে থাকা কাউকে এবং স্কুলের এক শিক্ষককে খেয়ে দেখার কথা। তাও কতটা মানা হচ্ছে তা নিয়ে অনেকেই বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন। এমনকি, জনপ্রতিনিধিদের স্কুলে গিয়ে বিষয়গুলি দেখার কথা। এই নিয়মগুলি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্কুলেই রান্না করতে হবে মিড ডে মিলের খাবার। কিন্তু সুবিধার জন্য একই এলাকার কয়েকটি স্কুল একসঙ্গে রান্না করে। এভাবে একটি স্কুল থেকে অন্য স্কুলে খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় তাতে কিছু পড়ে খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কার কথাও ওঠে। ঠিক নয়, প্রতি স্কুলেই রান্নার ব্যবস্থা হবে। এদিন ঠিক হয়েছে সবই মহকুমাশাসককে জানান হবে।
বৈঠকে যোগ না দেওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “সংখ্যালঘু বোর্ডের কেউ বৈঠক ডাকলে আমরা যাব না। যদি কমিশনার, সচিব বৈঠক ডাকলে যেতাম।” শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ রুমা নাথ অবশ্য বলেন, “মিড ডে মিল নিয়েও তৃণমূল রাজনীতি করছে। নিয়ম মেনে যা যা করণীয় তা আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।” আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বাম কাউন্সিলরদের অধিকাংশ। পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “প্রচারের জন্য এসব হচ্ছে। অনেক স্কুলে জল, রান্নাঘর, শেড নেই।” |