|
|
|
|
ভোটের আগেও হিংসা অব্যাহত বসিরহাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বসিরহাট |
মনোনয়ন-পর্ব শুরুর সময় থেকে বসিরহাট মহকুমার নানা প্রান্তে যে রাজনৈতিক হিংসা দেখা গিয়েছিল, তা অব্যাহত রইল পঞ্চায়েত ভোটের দু’দিন আগেও।
বুধবার রাতে বসিরহাটের দেবরাজপুর গ্রামে কংগ্রেস সমর্থক আব্দুল হামিদ গাজি ও তাঁর পরিবারের তিন জনকে সিপিএমের লোকজন বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে কয়েক জন সিপিএম সমর্থকেরা বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই চার জনকে বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মূল অভিযুক্ত মসিবর রহমান এবং আব্দার রহমান হামিদের প্রতিবেশী। জমি নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। সিপিএম অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, গ্রাম্য বিবাদের জেরে ওই ঘটনা। এর মধ্যে রাজনীতি নেই।
হামিদরা জানিয়েছেন, রাত ১০টা নাগাদ একটি গাড়িতে করে হামলাকারীরা বাড়িতে চড়াও হয়। গুলি-বোমা ছুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। প্রতিবাদ করায় মারধর করে। আহতদের আত্মীয় আনসার আলি মণ্ডল বলেন, “আমরা কংগ্রেস করি বলে ওরা অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। মারধরের পরে ওরা বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা নেভান।” পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা পলাতক।
মনোনয়ন জমার পর থেকে মিনাখাঁ কুমারজোল গ্রামের সিপিএম প্রার্থী সাত্তার গাজি ঘরছাড়া ছিলেন। বুধবার তিনি ফেরেন। রাতে তৃণমূল সমর্থকেরা তাঁকে মারধর করে ও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকালেও এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। কয়েক জন সিপিএম সমর্থক গ্রামে ঢুকতে বাধা পান। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। পদ্মপুকুরের এক সিপিএম কর্মীকেও তৃণমূলের লোকজন মারে বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার সকালে হাসনাবাদের দক্ষিণ ভেবিয়ার উত্তরপাড়ায় তৃণমূল প্রার্থী ওয়াজেদ গাজির ভাইপো সামাদ গাজিকে সিপিএমের দুই সমর্থক বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। সামাদের নাক ফাটে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সিপিএম অভিযোগ মানেনি। স্বরূপনগরের বিথারী পশ্চিমপাড়ার সিপিএম সমর্থক কবির হোসেন মুহুরি এবং তাঁর স্ত্রী নীলিমা বিবিকে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কবির হোসেনের অভিযোগ, পানীয় জলের লাইনে জল নেওয়ার মতো সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে তৃণমূলের লোকেরা বাড়ি ভাঙচুর এবং মারধর করে। তৃণণূল অভিযোগ মানেনি। সন্দেশখালি-২ ব্লকের ভাঙতুষখালি মিস্ত্রিপাড়ায় সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
সিপিএম নেতা সাজাহান লস্করের অভিযোগ, “বৌমা সিপিএম প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিচ্ছিল। রাতে তৃণমূলের কয়েক জন মোটরবাইকে করে এসে রাস্তার দু’পাশ আটকে প্রচণ্ড মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুর করে। পরিবারের সকলেই আহত হন।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা রঞ্জিত দাস বলেন, “দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদের জেরে গণ্ডগোল হয়। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” |
|
|
|
|
|