প্রথম দফা পঞ্চায়েত ভোটে মাওবাদী প্রভাবিত তিন জেলায় গিয়ে কলকাতা পুলিশের কর্মীদের নানা অব্যবস্থার মধ্যে পড়তে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ঘাটালের দাসপুরে ক্ষুব্ধ পুলিশ কর্মীরা পথ অবরোধও করেন। একই সমস্যা দেখা দেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। এ বার তৃতীয় দফায় ভোটে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে অসন্তোষ দেখা দিল ভোটের দায়িত্বে আসা কলকাতা পুলিশের কর্মীদের মধ্যে। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “পুলিশ কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে একটু দেরি হয়েছে। তবে অব্যবস্থা নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।”
সুন্দরবন লাগোয়া কালীতলায় ডিউটি পড়েছে কলকাতা পুলিশের কয়েক জনের। তাঁদের অভিযোগ, সকাল থেকে দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছিল পুলিশ লাইনে। কেউ আবার ছিলেন কোনও স্কুলে। লঞ্চঘাটেও অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। কলকাতা থেকে গাড়িতে আসার পরে আর কোনও প্রশাসনের তরফে সহায়তাই মেলেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। খাবার দেওয়া হয়নি। কোথায় পাঠানো হবে, তখনও তা জানানো হয়নি ওই কর্মীদের। বেশ কয়েক ঘণ্টা বসিরহাট পুলিশ লাইনে অপেক্ষা করার পরে যখন হাসনাবাদ লঞ্চ ঘাটে নিয়ে আসা হল ওই কর্মীদের, তখন আবার আকাশভাঙা বৃষ্টি। তাতে আরও খেপে ওঠেন কর্মীরা। এক জন বলেন, “সারা দিন ধরে হাপিত্যেশ করে বসে আছি। আমাদের চার জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের পাঠানো হয় হাসপাতালে। কিন্তু কেউ কোনও খোঁজ-খবরই করছে না।”
কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল বলেন, “খাওয়া-থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। এক বোতল জল পর্যন্ত কিনে খেতে হচ্ছে। দুপুরে ভাত খেতে হল পকেটের টাকায়।” তাঁর দাবি, বসিরহাট শহরে এক প্লেট ডিম-ভাতের দাম নিয়েছে ৯৫ টাকা। মাছ-ভাত ১২০ টাকা। যা অন্য দিনের থেকে অনেকটাই বেশি। ওই কর্মীর কথায়, “বহু জায়গায় গিয়েছি। এমন অব্যবস্থা কোথাও দেখিনি। সুযোগ বুঝে দোকানে খাওয়ার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।” এক দোকানি বললেন, “এত লোক এসেছে। আমাদের কিছু বাড়তি লাভের আশা তো করতেই পারি।” ভোটকর্মীদের আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল লঞ্চে। তাঁদের এক জন বলে গেলেন, “ব্যালট রয়েছে সঙ্গে। অথচ পুলিশ নেই। শুনলাম পুলিশ পাঠানো হবে পরে। এই অবস্থায় যদি কেউ ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে যায়, তা হলে কী করব জানি না। খুবই অসুরক্ষিত বোধ করছি।” লঞ্চঘাটে পরে এক পুলিশ কর্মীকে বলতে শোনা গেল, “প্রিজাইডিং অফিসার, ভোটকর্মীরা জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেলেন। অথচ পুলিশ বসে রইল। এমন কাণ্ড কখনও দেখিনি। কোনও পরিকল্পনা নেই।” |